ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে :মাহবুবা নাসরীন


প্রকাশিত:
৭ জুন ২০২২ ০৬:৪৭

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২০

 

যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব সমাজের একেক জনের ওপর একেক রকম প্রভাব পড়ে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন। তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে একেকজন একেক অভিজ্ঞতার শিকার হয়। তাদের ঝুঁকি প্রশমন থেকে শুরু করে 'রিজিলিয়েন্স' আলাদা হয়। শহর ও গ্রামের মধ্যেও বেশ পার্থক্য লক্ষ করা যায়।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে 'রিজিলিয়েন্স মেকানিজম' যোগ করা যেতে পারে। তবে এদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমন কিংবা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় 'ইন্টারসেকশনাল' শব্দটি এখনো আসেনি, কিন্তু 'অন্তর্ভুক্তিমূলক' শব্দটি এসেছে। বাংলাদেশে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক দুইটি মন্ত্রণালয় থাকলেও তাদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। এ বিষয়ে শুধু এই দুই মন্ত্রণালয়ই নয়, বরং মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন।


বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের আর সি মজুমদার অডিটোরিয়াম 'ইকোলজিক্যাল সিস্টেমবেজড রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ইন্টারসেকশনালিটি' শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারিবিলিটি স্টাডিজ (আইডিএমভিএস) এবং জেন্ডার রেসপন্সিভ রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড ইন্টারসেকশনালিটি ইন পলিসি অ্যান্ড প্র‍াকটিস (জিআরআরআইপিপি), সাউথ এশিয়া এর আয়োজন করে।

মূল প্রবন্ধে মাহবুবা নাসরীন বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো ওই অর্থে এখনো কার্বন নিঃসরণ না করলেও আমরা সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছি এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এছাড়া অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এদেশে নব্বইয়ের দশকেই ২৭১ রকমের মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের গাছ, উদ্ভিদ, প্রাণীও বিলুপ্ত হয়ে গেছে। শিল্পায়নের এই যুগে কৃষিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় কিংবা বন উজাড় করে মানুষ নিজদের আবাসনের ব্যবস্থা করছে। ওজন স্তরেও ছিদ্র হয়ে গেছে। ফলে ওজন স্তরে ছিদ্রের জন্যে দায়ী না হয়েও নিউজিল্যান্ডসহ অনেক দেশ এর ভুক্তভোগী হয়েছে। এর ফলে ওইসব দেশে চর্মরোগ কিংবা ক্যানসার বাড়ছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ বাংলাদেশের মানুষ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তাদের আবাসন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কর্মক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকটও এক ধরনের দুর্যোগ বয়ে আনে। অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন হলে এর প্রভাব সমাজের সবার ওপর এক হবে না।

আইডিএমভিএসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. দিলারা জাহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাহিদ রেজোয়ানা, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামশাদ নওরীণ, ইউথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান সোহান এবং চন্দ্রকলির সমন্বয়ক শাখাওয়াত উল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিএমভিএসের প্রভাষক মুহাম্মদ আওফা ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে দিলারা জাহিদ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নিজের অবস্থান থেকে কাজ করা শুরু করতে হবে। আমি একা কী করব?- এই চিন্তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের যেসব প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে সেগুলোর যথেচ্ছ ব্যবহার না করে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। নিজেদের পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top