ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১

সেন্টমার্টিন দ্বীপে পাকা স্থাপনা নির্মাণে বিপন্ন পরিবেশ, বন্ধে অভিযান অব্যাহত


প্রকাশিত:
২৮ জানুয়ারী ২০২২ ০৮:৪৯

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৪১

অবৈধভাবে নির্মিত হচ্ছে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের মালিকানাধীন ‘ড্রিমার্স প্যারাডাইস’

প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে বহুদিন থেকেই চলছে অবাধে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অসুস্থ্য প্রতিযোগিতা। স্থাপনা নির্মাণ প্রতিরোধে ২৭ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে অবৈধ পাকা ভবন নির্মাণের দায়ে ৪ টি রিসোর্টকে সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে দ্বীপের বেশ কয়েকটি রিসোর্টের বিপুল পরিমাণ নির্মাণসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন কয়েকটি রিসোর্ট কর্তৃপক্ষকে সাত দিনের মধ্যে নিজ খরচে স্থাপনা ভেঙে ফেলার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

২৬ জানুয়ারী বুধবার, সংবাদ মাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।  পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশের প্রেক্ষিতে সেন্টমার্টিনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তর।

এদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে উল্টো আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন দ্বীপের অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণকারীরা । তারা বলেছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর নিজেই সেন্টমার্টিন দ্বীপে পাকা দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেছে, যা দেশের প্রচলিত আইন লঙ্ঘন করে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নওরীন হকের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে দ্বীপের আটলান্টিক রিসোর্টকে অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণের দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। 

আটলান্টিক রিসোর্টকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করায় ওই রিসোর্টের দায়িত্বরত ম্যানেজার আমজাদ হোসেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলে ‘যে দ্বীপে পাকা ভবন করার দায়ে আমাদের জরিমানা করা হয়েছে সেই দ্বীপেই পরিবেশ অফিসটিও নির্মাণ করা হয়েছে পাকা দোতলা ভবনের। পরিবেশ অধিদপ্তর পাকা ভবন করলে দূষণ হয় না কিন্তু আমরা করলে নাকি দূষণ হয়।’

এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আজহারুল ইসলামের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর সরকারের অনুমতি নিয়েই  দ্বীপে পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। এটা সরকারি অফিস, কোনো বাণিজ্যিক স্থাপনা নয়। আমরা দ্বীপে এরকম স্থাপনা করতে কাউকে নিষেধ করছি না। কেবল বলছি, সরকারের নিয়মানুযায়ী অনুমতি নিয়ে করুন।’

আজহারুল ইসলাম আরো বলেন, দ্বীপে সাগরের পানিছোঁয়া সৈকতে নির্মাণাধীন রয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রশীদের মালিকানাধীন ‘ড্রিমার্স প্যারাডাইস’। ভ্রাম্যমাণ আদালত রিসোর্টটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে নিজেদের খরচে আগামী সাত দিনের মধ্যে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দিয়েছে। ধারাবহিকভাবে প্রিন্স হ্যাভেনকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনে ১ লাখ টাকা ও অবৈধ স্থাপনার দায়ে ফ্রেন্ডস রিসোর্টকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। সেই সাথে আরো কয়েকটি পাকা স্থাপনাও ৭ দিনের মধ্যে নিজ খরচে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি,পরিবেশ কর্মীরা হাতুড়ি দিয়ে কয়েকটি স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সরকার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপসহ আশপাশের এক হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (এমপিএ) ঘোষণা করেছে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেছেন, ‘দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি যেকোনো মূলে আমাদের রক্ষা করতে হবে। এ কারণে দ্বীপ ও দ্বীপ সন্নিহিত সাগরের পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সর্ম্পকে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকেই সচেতন করা দরকার।’




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top