ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

প্রযুক্তি, জলবায়ু পরিবর্তন নতুন বৈষম্য তৈরি করছে: জাতিসংঘ


প্রকাশিত:
১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:২৭

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৩

পরিবেশ টিভি: প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন নতুন বৈষম্য তৈরি করছে। এ বৈষম্য এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে এটি সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের এক নতুন প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।

 প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। এতে বলা হয়েছে, আধুনিক সময়ে সম্পদ ও আয়ের পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রযুক্তির মতো বিষয়গুলো জোরালো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। প্রচলিত ব্যবস্থায় চরম দারিদ্র্য ও রোগের মতো বিষয়গুলোতে অগ্রগতি হওয়ায় এখন নতুন ধরনের এই বৈষম্যগুলো বাড়ছে।

জলবায়ু সংকট এবং ব্যাপক প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের ছত্রছায়ায় মানুষের বিকাশের অসমতা একটি নতুন রূপ নিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু সংকট ইতোমধ্যেই সর্বাধিক দারিদ্রপীড়িত জনগোষ্ঠীকে আঘাত করতে শুরু করেছে। অন্যদিকে মেশিন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বিপুল সংখ্যক মানুষ এমনকি বহু দেশকে পিছনে ফেলে দিতে পারে।

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)-এর প্রশাসক আছিম স্টেইনার বলেন, নতুন এই বৈষম্যগুলোকে মেনে নেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এমন সময়ে ইউএনডিপি-এর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো যার কদিন আগেই আরেক প্রতিবেদনে উঠে আসে সমুদ্রে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় কিভাবে হুমকির মুখে পড়ছে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য! ওই গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করে জাতিসংঘের পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা আইইউসিএন। এতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দূষণের ফলে সাগর-মহাসাগরগুলোতে কমছে অক্সিজেনের পরিমাণ। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মাছের বহু প্রজাতি।

বহু দশক ধরেই বিজ্ঞানীরা জানতেন যে, মহাসাগরগুলোতে পুষ্টিমান কমে যাচ্ছে। এখন গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অক্সিজেন হ্রাস পরিস্থিতিকে আরও মারাত্মক করে তুলছে। এতে করে হুমকিতে পড়ছে টুনা, মার্লিন, হাঙ্গরের মতো বহু মাছ। কারণ বড় মাছগুলোর বেশি শক্তির দরকার হয়।

দুনিয়াজুড়ে ৭০০-এরও বেশি সামুদ্রিক এলাকা এখন অক্সিজেন স্বল্পতায় ভুগছে। ১৯৬০ এর দশকে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৫টি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষি খামার ও শিল্প কারখানা থেকে নাইট্রোজেন ও ফসফরাস সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মিশে যাওয়ার ফলেই দূষণের ঘটনা ঘটছে। এটি সমুদ্রের পানিতে থাকা অক্সিজেনের ক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এতোদিন ধারণা করা হতো, এটি শুধুমাত্র উপকূলীয় এলাকার সমুদ্রেই প্রভাব ফেলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই হুমকির মাত্রা বেড়েছে।

গ্রিন হাউসের ফলে যেহেতু কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই সমুদ্রগুলোকে আরও বেশি তাপ শুষে নিতে হচ্ছে। ফলে উষ্ণ পানি কম অক্সিজেন ধরে রাখতে পারছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ১৯৬০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সমুদ্রের পানি থেকে দুই শতাংশ অক্সিজেন হারিয়ে গেছে। পুরো দুনিয়ার বিবেচনায় এটা খুব বেশি মনে না-ও হতে পারে। কিন্তু কোনও কোনও গ্রীষ্মপ্রধান এলাকায় এই হার ৪০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এমনকি খুব সামান্য পরিবর্তনও সামুদ্রিক জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top