ঢাকা সোমবার, ৩১শে মার্চ ২০২৫, ১৮ই চৈত্র ১৪৩১


ভারতে কমছে শকুন, বাড়ছে মানুষের মৃত্যুহার


প্রকাশিত:
২৮ জুলাই ২০২৪ ২০:০৮

আপডেট:
৩১ মার্চ ২০২৫ ১০:৪৬

একসময় ভারতের সবখানে বিপুলসংখ্যক শকুন দেখা যেত। কিন্তু দুই দশকের বেশি আগে থেকে ভারতে শকুন মারা যেতে থাকে।

১৯৯০–এর দশকের মাঝামাঝি যখন ভারতে গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত সস্তা নন–স্টেরয়েডাল ব্যথানাশক ‘ডাইক্লোফেনাক’–এর ব্যবহার শুরু হয় তখন থেকে বিপুলসংখ্যক শকুন কমতে থাকে। ওই ওষুধে চিকিৎসা করা পশুর মৃতদেহ খেয়ে অসুস্থ হওয়ার পর শকুনগুলো মারা যেতে থাকে।

এ ঘটনায় ২০০৬ সালে ডাইক্লোফেনাকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে সরকার। স্টেট অব ইন্ডিয়া’স বার্ডসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দীর্ঘ মেয়াদে শকুনের অন্তত তিনটি প্রজাতির ৯১ থেকে ৯৮ শতাংশ এ ওষুধের পরোক্ষ বিষক্রিয়ার শিকার হয়।

এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মৃত পশুর দেহাবশেষ খেয়ে বেঁচে থাকা এই পাখি কমে যাওয়ায় প্রাণঘাতী ব্যাকটেরিয়া ও নানা সংক্রমণ বেড়ে যায়; যা পাঁচ বছরে প্রায় অর্ধমিলিয়ন (পাঁচ লাখ) মানুষের মৃত্যুতে ভূমিকা রাখে।

গবেষণার সহরচয়িতা ও ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর হ্যারিস স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক ইয়েল ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘শকুন হচ্ছে প্রকৃতির পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কেননা, পরিবেশ থেকে নানা ক্ষতিকর উপাদান ও মৃত পশুর ব্যাকটেরিয়াবাহী দেহাবশেষ অপসারণে এরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শকুন না থাকলে ছড়িয়ে পড়তে পারে রোগবালাই।’

ইয়েল ফ্রাঙ্ক ও গবেষণার অপর সহরচয়িতা অনন্ত সুদর্শন ভারতের একসময়ের শকুনসমৃদ্ধ বিভিন্ন জেলায় দেখেন, গবাদিপশুর চিকিৎসায় প্রদাহবিরোধী বা ব্যথানাশক ওষুধের বিক্রি বেড়ে যাওয়ার পর শকুনের সংখ্যা কমে গেছে এবং একসময়ের শকুনসমৃদ্ধ জেলাগুলোয় মানুষের মৃত্যুর হার ৪ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে।

গবেষকদের ধারণা, ভারতে ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে শকুন কমে যাওয়ায় ওই সময় প্রতিবছর অতিরিক্ত ১ লাখ করে মানুষের মৃত্যু হয়।

স্টেট অব ইন্ডিয়া’স বার্ডসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে বর্তমানে যেসব শকুন রয়েছে, তারা মূলত গবাদিপশুর চেয়ে সংরক্ষিত এলাকার বন্য প্রাণীর মৃতদেহ খেয়ে টিকে আছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, গবাদিপশুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ এখনো শকুনের জন্য এক বড় হুমকি। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত গবাদিপশুর মৃতদেহ কমে যাওয়া, খ্যাপাটে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া ওই সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top