ঢাকা সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩১


হিমালয়ে কৃত্রিম হিমবাহ বানিয়ে পানির সমস্যা মেটাচ্ছেন লাদাখের ‘বরফমানব’


প্রকাশিত:
২১ জুন ২০২৪ ১৮:৩২

আপডেট:
১ জুলাই ২০২৪ ০২:০৭

সেচের অভাবে হিমালয়ে চাষাবাদ না হওয়ায় কৃত্রিম হিমবাহ তৈরি করছেন একজন স্থানীয় উদ্ভাবক। লাদাখের একটি গ্রামে চেওয়াং নরফেল নামের এই উদ্ভাবক হিমালয়ের কৃত্রিম হিমবাহ তৈরি করে ফসলের জন্য পানি সরবরাহ করছেন। তার কাজের জন্য তাকে ‘লাদাখের বরফমানব’ বলা হয়।

সেচ সমস্যার সমাধানে ৮৭ বছর বয়সী নরফেল বিভিন্ন গ্রামে পরিদর্শন করেছেন। তিনি দেখেন, ৮০ শতাংশ কৃষক পানির ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। হিমবাহ গলিত পানি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পানি শুধু জুনের মাঝামাঝি প্রবাহিত হয়। এ কারণে কৃষিসম্পদ সংরক্ষণে নরফেল একটি কৃত্রিম হিমবাহ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে তিনি নাংসহ লাদাখ অঞ্চলের আরও ১০টি গ্রামে কৃত্রিম হিমবাহ তৈরি করেন।

নরফেল কৌশলগতভাবে বিভিন্ন উচ্চতায় একাধিক হিমবাহ তৈরি করেছেন। গ্রামের সবচেয়ে কাছের হিমবাহ, সর্বনিম্ন উচ্চতায় অবস্থিত। এটি প্রথমে গলে গিয়ে বসন্তে প্রাথমিক বপনের সময় প্রয়োজনীয় সেচের পানি সরবরাহ করে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অতি উচ্চতায় পরবর্তী হিমবাহ গলতে শুরু করে, যা নিচের দিকের জমিতে সময়মতো সেচের পানি সরবরাহ নিশ্চিত করে।

নাং গ্রামের কৃষকেরা এই হিমবাহের জন্য কৃতজ্ঞ। ৪৪ বছর বয়সী কৃষক রিগজেন ওয়াঙ্গাল বলেন, কৃত্রিম হিমবাহের আগে আমাদের পর্যাপ্ত পানি পাওয়া কঠিন ছিল। যদিও প্রচুর তুষারপাত ছিল, কিন্তু তা অনেক দূরে ছিল। সেগুলো গলে আমাদের কাছাকাছি আসতে অনেক সময় লাগত। এ কারণে ফসল কাটতে দেরি হতো এবং কখনো কখনো আমাদের খামারগুলো পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছিল। এখন পর্যাপ্ত পানি আছে।

১৯৯৫ সালে কৃত্রিম হিমবাহ তৈরির জন্য একটি অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে কাজ শুরু করেন নরফেল। হিমবাহ তৈরির জন্য ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ভারতের অন্যতম বড় বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী পেয়েছেন। তার এই উদ্ভাবনী ধারণা অন্যান্য প্রকল্পের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। যেমন লাদাখে সোনম ওয়াংচুকের বরফ স্তূপ। যেখানে হিমায়িত জল গলানোর আগে স্তূপের আকার ধারণ করে এবং চাষের মৌসুমে পানি বিতরণ করা হয়।

 


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top