ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


নিম্ন জন্ম হারের নতুন রেকর্ড গড়ল দক্ষিণ কোরিয়া


প্রকাশিত:
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৬

আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৫২

দক্ষিণ কোরিয়ায় নারীরা সন্তান জন্মদানে আগ্রহ দিন দিন হারিয়ে ফেলছেন।

এ নিয়ে টানা চতুর্থ বছর মোট জনসংখ্যা হ্রাস পেলো দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এর একমাত্র সদস্য দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটির নারী প্রজনন হার ২০১৮ সাল থেকে ১ এর নিচে অবস্থান করছে।

বেশ আগে থেকেই দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বে সবচেয়ে কম জন্মহারের দেশ ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে শুধু দেশটিতে কম শিশুই জন্মগ্রহণ করেনি বরং মোট জনসংখ্যা আগের বছরের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। যা এক নতুন রেকর্ড গড়েছে। এমনটাই জানা যায়, শিশু জন্ম ও নারী প্রজনন হার নিয়ে বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যানে।

শিশু জন্মহার হ্রাস মানে দেশে শ্রমশক্তির হ্রাস এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। যে কোনো দেশের অর্থনীতিতেই জনসংখ্যার এই পরিসংখ্যান নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দেশে জন্মহার বাড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু সরকারের সব প্রচেষ্টাই এখন পর্যন্ত ব্যর্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় নারীরা সন্তান জন্মদানে আগ্রহ দিন দিন হারিয়ে ফেলছেন। দেশটিতে গড়ে একজন নারীর তার জীবনের পূর্ণ প্রজনন সময়ে সন্তান জন্মদানের হার মাত্র ০ দশমিক ৭২। গত বছরও যে হার ছিল ০ দশমিক ৭৮।

২০১৮ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়াই দ্য অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এর একমাত্র সদস্য যাদের নারী প্রজনন হার ১ এর নিচে। এ পরিস্থিতিতে জন্মহারের নিম্নগতি আটকাতে জাতীয়ভাবে অগ্রাধিকার ভিক্তিতে কাজ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে দেশটির সরকার। গত ডিসেম্বরে সরকার থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ‘অসাধারণ কিছু ব্যবস্থা’ গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও এসেছে।

এ বছর এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের জন্য আরো বাসস্থান এবং আরো সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, যাতে জন্মহার হ্রাসের প্রবণতা আটকে দেওয়া যায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজ ব্যবস্থায় বিয়েকে সন্তান জন্মদানের পূর্বশর্ত হিসেবে দেখা হয়। সেখানে শিশু জন্মহার হ্রাসের পাশপাশি তরুণদের মধ্যে বিয়ে করার প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে। এর কারণ হিসেবে জীবনযাত্রার অত্যধিক ব্যয় এবং অস্বাভাবিক দীর্ঘ কর্মঘণ্টাকে দায়ী করা হচ্ছে। নারীদের ঘর-বাহির দুটোই সামলাতে হয় বলে তাদের মধ্যে সন্তান জন্মদানে অনাগ্রহ বাড়ছে।

জন্মহার হ্রাস এবং বয়স্ক জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সমস্যা শুধু দক্ষিণ কোরিয়াকেই মোকাবেলা করতে হচ্ছে না। বরং তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোকেও একই সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।

২০২২ সালে জাপানে জন্মহার রেকর্ড হ্রাস পেয়ে ১ দশমিক ২৬ হয়। চীনে ছিল আরো কম, ১ দশমিক ০৯। যা দেশটিতে নতুন রেকর্ড।

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত বছর সবচেয়ে কম জন্মহার ছিল রাজধানী সিউলে, ০ দশমিক ৫৫।

এ বছর দেশটিতে জন্মহার আরো কমে ০ দশমিক ৬৮ এ নেমে যেতে পারে বলেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top