বন্যার পানিতে ডুববে না ঘর, উদ্ভাবন আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের
পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ ব-দ্বীপ বাংলাদেশে পরিচিত প্রাকৃতিক দুর্যোগের নাম বন্যা। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় লাখো মানুষের দুর্ভোগের মধ্যেই এল সুখবর। বন্যা প্রবণ এলাকায় পানিতে ভেসে থাকবে এমন মডেলের ঘর তৈরি করেছে আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের একটি গবেষক দল।
‘বন্যায় ভাসমান বাসগৃহের’ এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তরী’। এই বাসগৃহ বন্যার পানিতে ভেসে থাকবে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আবার আগের অবস্থানে ফিরে যাবে।
গবেষকরা জানায়, বাংলাদেশে ভূমিরুপ মূলত সমতল। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও মেঘনা- এই তিনটি বৃহৎ নদীব্যবস্থায় গঠিত এই ব-দ্বীপের বহু নদী আন্তর্জাতিক সীমানার বাইরে উৎপন্ন। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র -মেঘনা নদীপ্রণালী ১৭.৬ লাখ বর্গকিলোমিটার আয়তনের অববাহিকা এলাকাকে নিষ্কাশিত করে থাকে।
পুনর্বাসনের জন্য প্রস্তাবিত এই বাসগৃহে রয়েছে একটি বসতঘর, একটি রান্নাঘর, একটি শৌচাগার ও একটি বারান্দা। এই বাসগৃহের নির্মাণ খরচও সাধারণ ঘরের মতো সকলের নাগালের মধ্যে। এটি তৈরিতে ব্যবহার করা উপকরণ হবে অগ্নি প্রতিরোধী, পরিবেশ বান্ধব। ঘুনে পোকায় আক্রান্ত হবে না এই ঘর। একই সঙ্গে প্রতিটি বাসগৃহ স্বাভাবিক রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ বছর টিকে থাকবে। এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুবই কম এবং খুবই সহজ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কাউকেই সহজেই প্রশিক্ষিত করে বাসগৃহ হস্তান্তর করা সম্ভব। একটি বাসগৃহ দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই নির্মার্ণ করা সম্ভব এবং চাইলে সহজেই স্থানান্তর করা যাবে।
পরীক্ষামূলক মডেলটির সব ধরনের টেকনিক্যাল পরীক্ষা–নিরীক্ষা ল্যাবরেটরিতে সম্পন্ন হয়েছে। গবেষক দলের শিক্ষার্থীরা আশা করছেন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রথম ঘরটি বন্য কবলিত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য হস্তান্তর করতে পারবে।
গবেষক দল আশা করছে, সরকারি সহযোগীতা পেলে কিংবা বাণিজ্যিক উৎপাদনে কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে প্রস্তাবিত ভাসমান বাসগৃহটি স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি করে আরও কম খরচে নির্মাণ করতে পারবে।
গবেষক দলে রয়েছেন, বর্তমানে পুরকৌশল বিভাগে ৩য় বর্ষে অধ্যায়ণরত মো. আব্দুল্লাহ আল নাঈম, ২য় বর্ষের নাহিয়ান ও আওয়াল এবং প্রকৌশলী সাঈদ মো. নাজমুল হক।
বিষয়: বন্যা ঘর উদ্ভাবন আহসান উল্লাহ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: