রহস্যময় ডার্ক কমেট নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন তথ্য

অন্ধকার ধূমকেতু সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এমনকি এরা পৃথিবীতে সম্ভবত পানির যোগানও দিয়েছে বলে জানা গেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান’-এর এক গবেষণায় ।
পৃথিবীর নিকটবর্তী যেসব বস্তু আছে, তার ৬০ শতাংশই সম্ভবত ডার্ক কমেট বা অন্ধকার ধূমকেতু। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব রহস্যময় বস্তুতে হয় বরফ আছে, বা এক সময় ছিল।
দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের অনুমান, বৃহস্পতি ও মঙ্গল গ্রহের মাঝখানে থাকা গ্রহাণু বেল্টে যেসব গ্রহাণুর অবস্থান, সেগুলোতে বরফ থাকার সম্ভাবনা আছে।
এই গবেষণার মূল লেখক অ্যাস্টার টেইলরের মতে, এইসব অন্ধকার ধূমকেতু পৃথিবীর কাছাকাছি পরিবেশে বরফ আনার পথ হিসেবে কাজ করতে পারে, যেগুলো সূর্যের কাছে যাওয়ার সময় এক ধরনের ‘অস্পষ্ট কোমা’ অর্থাৎ গ্যাস ও ধূলিকণার মেঘ সৃষ্টি করে।
এ ঊর্ধ্বপাতন প্রক্রিয়ার কারণে ধূমকেতুতে সামান্য ত্বরণও ঘটে। তবে, তা মাধ্যাকর্ষণ নয়, বরং ঊর্ধ্বপাতন বরফের কারণে ঘটে থাকে।
এ গবেষণায় সাতটি অন্ধকার ধূমকেতু নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। আর এ থেকে পাওয়া অনুমান বলছে, পৃথিবীর নিকটবর্তী সব ধরনের বস্তুর আধা শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশই সম্ভবত অন্ধকার ধূমকেতু।
টেইলর ও তার গবেষণা দল খুঁজে পান, বৃহস্পতি-পরিবারের বিভিন্ন ধূমকেতু থেকে একটি বড় অন্ধকার ধূমকেতুর উৎপত্তি হতে পারে, যার কক্ষপথ বৃহস্পতির পাশ দিয়ে গিয়েছে।
বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘ইকারাস’-এ প্রকাশিত এ গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, এইসব অন্ধকার ধূমকেতু সম্ভবত গ্রহাণু বেল্ট থেকে এসেছে।
এক্ষেত্রে গবেষকরা মাধ্যাকর্ষণবিহীন স্বতন্ত্র বস্তুর ত্বরণ নির্ধারণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন গতিশীল মডেল ব্যবহার করেছেন, যেখানে তারা এইসব বস্তুর পথচলার এমন মডেল তৈরি করেছেন, যেগুলোর ব্যপ্তি এক লাখ বছরের বেশি।
গবেষণা অনুসারে, এর মধ্যে বেশিরভাগ বস্তুর শেষ পরিণতি ঘটেছে, যেখানে এখন এইসব অন্ধকার ধুমকেতুর অবস্থান। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, এদের সবচেয়ে সম্ভাব্য উৎস হতে পারে গ্রহাণু বেল্ট।
এদিকে, ‘২০০৩ আরএম’ নামের একটি অন্ধকার ধূমকেতুতে উপবৃত্তাকার কক্ষপথ রয়েছে, যা একে পৃথিবীর কাছাকাছি নিয়ে এসে পরবর্তীতে আবারও বৃহস্পতির দিকে নিয়ে যায়। আর কক্ষপথটি এমন ধূমকেতুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা এর মূল পথ থেকে ভেতরের দিকে ছিটকে পড়েছিল।
গবেষণায় ইঙ্গিত মিলেছে, ‘২০০৩ আরএম’ সম্ভবত এসেছে গ্রহাণু বেল্টের বাইরের মূল বেল্ট থেকে, যেখানে অন্যান্য অন্ধকার ধূমকেতু সম্ভবত ভেতরের মূল বেল্ট থেকে এসেছে। এতে প্রমাণ মেলে, ভেতরের প্রধান বেল্টে বরফের উপস্থিতি রয়েছে।
বিষয়: ডার্ক কমেট বিজ্ঞানী ধূমকেতু সূর্য
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: