ঢাকা শুক্রবার, ২৮শে জুন ২০২৪, ১৫ই আষাঢ় ১৪৩১


‘প্লাস্টিক খেকো’ ব্যাক্টেরিয়া কমাবে প্লাস্টিক দূষন


প্রকাশিত:
১ মে ২০২৪ ১৯:২০

আপডেট:
২৮ জুন ২০২৪ ১৮:৫৩

প্লাস্টিক মাটির সাথে পঁচে মিশে যায় না বলে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্টের অন্যতম কারণ প্লাস্টিক দূষন। এবার বিজ্ঞানীরা এক ধরনের অদ্ভুদ প্লাস্টিকের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, যেটি ‘নিজে নিজে ধ্বংস বা পচন ঘটাতে পারে’। এর ফলে পরিবেশ দূষণ কমতে পারে বলে আশা করছেন গবেষকরা।

বিবিসি লিখেছে, ফোনের কভার,স্পোর্টস সুজ বা জুতা তৈরিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুতেই ব্যবহার করা হয় পলিউরেথেন। কিন্তু এই প্লাস্টিক উপাদান রিসাইকেল করা কঠিন। ফলে ব্যবহারের পর সাধারণত সেগুলো ল্যান্ডফিল বা ময়লার ভাগাড়ে গিয়ে জমা হয়। এক্ষেত্রে ‘বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বা জাদুর মত’ সমাধান নিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা।

ফিউশন ছাড়াই রিপ্রোডাক্টিভ সেলের মাধ্যমে তৈরি ব্যাকরিয়া যুক্ত করে তারা এমন একটি প্লাস্টিক তৈরি করেছেন, যা নিজে নিজেই ধ্বংস বা নিঃশ্বেস হতে পারে। সেই প্লাস্টিক মানুষের কাজে যতদিন ব্যবহার হবে, ততদিন সেলগুলো সুপ্ত থাকবে। কিন্তু যখন মাটিতে পড়ে কমপোস্টের পুষ্টি উপাদানের সংস্পর্শ পাবে, তখন সেই ব্যাকটেরিয়াগুলো নতুন জীবন পাবে এবং প্লাস্টিকের পচন ঘটানো শুরু করবে।

‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক হান সল কিম বলন, “আমরা হয়ত প্রকৃতিতে প্লাস্টিক দূষণ কমাতে পারব।”

ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারে প্লাস্টিককে আরো টেকসই করে তৈরি করার একটি বাড়তি সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

“আমাদের এই প্রক্রিয়ায় প্লাস্টিক পণ্য আরো মজবুত হয়, ফলে এগুলো দীর্ঘ সময় ব্যবহার করা যেতে পারে,” বলেন সহকারী গবেষক জন পোকরস্কি৷

বিবিসিকে তিনি বলেন, “এরপর ব্যবহার শেষ হলে পরিবেশ থেকে এটি আমরা নির্মূল করতে করতে পারি।”

তবে এই প্লাস্টিক তৈরির কাজটি এখনো গবেষণাগারেই রয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কোনো কোম্পানির হাত ধরে এ প্রযুক্তি সবার নাগালে আসতে পারে।

এ ধরনের প্লাস্টিক তৈরিতে যে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে, সেটি মূলত ‘ব্যাসিলাস সাবটিলিস’। বিভিন্ন খাবার উপাদান এবং ‘প্রোবায়োটিক’ বা খাবারের উপকারী জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া হিসেবে এটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্লাস্টিক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উচ্চ তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পরে এ ব্যাকটেরিয়া।

ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে প্লাস্টিক তৈরির ধারণায় সবাই চোখ বুজে সায় দিচ্ছেন এমনও নয়।

কিছু বিজ্ঞানীর যুক্তি, এর চেয়ে বরং প্রথমে প্লাস্টিকে ব্যবহার কমানোর বেশি ভালো। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় কানাডায় একটি বৈশ্বিক চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা চলছে। দূষণ রোধে একটি চুক্তি হবে এমন প্রত্যাশা রয়েছে সেখানে।

পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেভোলিউশন প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক স্টিভ ফ্লেচার বলেন, “প্লাস্টিক দূষণ রোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল প্লাস্টিক উৎপাদনে কাটছাঁটের বিষয়ে বৈশ্বিকভাবে একমত হওয়া।”




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top