ঢাকা শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


প্রবালপ্রাচীর রক্ষায় শব্দের প্রভাব নির্ণয় করছেন বিজ্ঞানীরা


প্রকাশিত:
২২ মার্চ ২০২৪ ২০:০৮

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৪২

প্রবালপ্রাচীর ধ্বংসের জন্য দায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং সমুদ্রের লবণাক্ততা বৃদ্ধি। আর তাই দীর্ঘদিন থেকেই প্রবালপ্রাচীর রক্ষার কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এর অংশ হিসেবে প্রবাল লার্ভার ওপর শব্দের প্রভাব কেমন তা নির্ণয় করেছেন একদল বিজ্ঞানী। সহজভাবে বলতে গেলে শব্দের মাধ্যমে প্রবালপ্রাচীরের ক্ষতি কমানো যায় কি না, তা নিয়ে কাজও শুরু করেছেন তাঁরা। গবেষণার অংশ হিসেবে বিজ্ঞানীরা প্রথমে পানির নিচে স্পিকারে গান বাজিয়ে প্রবাল লার্ভার মনোযোগ আকর্ষণ করছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবালপ্রাচীরে জীবন ফিরিয়ে আনতে স্পিকারে বাজানো গান দারুণ কাজ করছে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে ইউএস ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জে চলা এ গবেষণায় যেসব স্থানে গান বাজানো হয়েছে, সেখানে সাত গুণ বেশি প্রবাল লার্ভার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের উডস হোল ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউশনের বিজ্ঞানী নাদেজ আওকি বলেন, ‘আমরা স্পিকারে গান বাজানোর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবালপ্রাচীরে লার্ভাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। স্পিকারের শব্দে প্রবাল লার্ভার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছকেও প্রবালপ্রাচীরের কাছে আকর্ষণ করা যাচ্ছে। অর্থাৎ স্পিকারের শব্দে প্রবাল লার্ভা ছুটে আসছে। বিষয়টিকে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্পের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’

বিশ্বব্যাপী গরম, অতিরিক্ত মাছ ধরা, দূষণ, বাসস্থানের ক্ষতি আর রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রবালপ্রাচীরের আকার কমছে। ১৯৫০ সালের চেয়ে এখন পৃথিবীতে অর্ধেক প্রবালপ্রাচীর রয়েছে। অবশিষ্ট প্রবালপ্রাচীর রক্ষার অংশ হিসেবে প্রবাল লার্ভা নিয়ে এ গবেষণা চালানো হচ্ছে। প্রবাল লার্ভা সমুদ্রের বিভিন্ন শব্দে সারা দেয়। এই কৌশলকেই কাজে লাগিয়ে প্রবাল লার্ভাদের ক্ষতিগ্রস্ত প্রাচীরের দিকে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে প্রবাল লার্ভার ওপরে শব্দের প্রভাব বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যে স্থানে শব্দ শোনা যায় সেখানে ১ দশমিক ৭ গুণ বেশি প্রবাল লার্ভা জমা হয়। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী স্টিভ সিম্পসন বলেন, ‘প্রবাল লার্ভা শব্দে সাড়া দেয়। আর তাই স্পিকারের শব্দের মাধ্যমে প্রবালপ্রাচীরের কাছে মাছ ও প্রাণের উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। প্রবালপ্রাচীরের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য শব্দ নিয়ে আরও গবেষণা করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বাড়ছে, সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সমুদ্রের প্রবালপ্রাচীর রক্ষায় সৃজনশীল ও টেকসই কাজ করতে হবে।’

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top