ঢাকা শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


চলনবিলে অবাধে চলছে পাখি শিকার, নির্বিকার প্রশাসন


প্রকাশিত:
২৪ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:০২

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ১৫:৫৬

ফাইল ছবি

পরিবেশ টিভি: চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে পাখি নিধন করা হচ্ছে। সৌখিন ও পেশাদার পাখিশিকারিরা বন্দুক, বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে এসব পাখি শিকার করছে। এতে  করে একদিকে জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে, অপরদিকে ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পোকার আক্রমণও বাড়ছে।

সূত্রমতে, রাজশাহী বিভাগের পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ৯টি উপজেলার সমন্বয়ে চলনবিল অঞ্চল বিস্তৃত। চলনবিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ১৪টি নদী ও ২২টি ছোট বড় বিল রয়েছে। নিম্নজলাভূমিতে এ মৌসুমে পানি শুকিয়ে আসায় ঝাঁকে ঝাঁকে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি ও অতিথি পাখি এসে ভিড় জমায়।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, অল্প পানিতে খাবার সংগ্রহের জন্য এ বছরও চলনবিলে দেশি ও অতিথি পাখি এসেছে। সেই সাথে প্রচুর মাছও দেখা যাচ্ছে। ফলে ঝাঁকে ঝাঁকে চখাচখি, পানকৌড়ি, বক, হরিয়াল, হারগিলা, রাতচোরা, বালিহাঁস, ইটালী, শর্লি, পিঁয়াজ খেকো, ত্রিশূল, বাটুইলা, নারুলিয়া, লালস্বর, কাঁদোখোচা, ফেফি, ডাহুক, গোয়াল, শামুখখোল, হটটিটি, ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি বসতে শুরু করেছে। আর এ সুযোগে একশ্রেণির সৌখিন ও পেশাদার পাখিশিকারি বন্দুক, বিষটোপ, কারেন্ট জাল ও ফাঁদ পেতে প্রতিনিয়ত পাখি শিকার করছে। প্রকাশ্যে এসব পাখি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন পেশাদার পাখিশিকারি বলেন, বাজারে পাখির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কোনোমতে ধরতে পারলেই বিক্রি করতে সমস্যা হয় না। প্রতিজোড়া পাখি প্রজাতিভেদে ১৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। ফলে বেশি লাভের আসায় অনেকেই মাছ ধরা বাদ দিয়ে পাখি শিকার করছেন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, গুরুদাসপুর, সিংড়া ও আত্রাই উপজেলা সদর থেকে দূরে প্রত্যন্ত এলাকায় সবচেয়ে বেশি পাখি কেনাবেচা হচ্ছে। ফলে এই এলাকাতে শিকারিদের আনাগোনাও বেশি। আর এসব দুর্গম এলাকাতে প্রশাসনের কোনো লোকজনও তেমন আসেন না।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, পাখিরা শুধু প্রকৃতির শোভা বর্ধন করে না, প্রকৃতির ভারসাম্যও রক্ষা করে। পোকামাকড় খেয়ে এরা কৃষকের উপকার করে। কিন্তু আইন থাকলেও পাখি নিধন বন্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। এ কারণে দেশ থেকে নানা প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে।

দি বার্ড সেফটি হাউস চেয়ারম্যান মি. মামুন বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেন, পাখি শিকার জীববৈচিত্র্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু পাখি নয়, বন্যপ্রাণী রক্ষায় যে যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। তা নাহলে আগামী প্রজন্মের শুধু কাগজে-কলমে বন্যপ্রাণীর নাম জানতে হবে।

 




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top