ঘাট নেই তবু ৩০ বছর ধরে টোল দিচ্ছেন কাউন্দিয়াবাসী

নেই কোনো ঘাট কিংবা যাতায়াতের সুব্যবস্থা। তবুও দিতে হচ্ছে টোল। রাজধানীর অদূরেই তুরাগ নদের মাঝে চারদিকে পানিবেষ্ঠিত কাউন্দিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২ লাখ মানুষ ৩০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই চলাচল করছেন।
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কমতি না থাকলেও কাউন্দিয়া ইউনিয়নের মানুষের জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ অসহনীয়। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছোট নৌকা। ঝড়বৃষ্টির দিনে এক রকম বন্ধ হয়ে যায় চলাচল।
এলাকাবাসী জানান, নৌকাডুবিতে প্রাণহানি অনেকটাই নিয়মিত ঘটনা কাউন্দিয়ায়। এর মধ্যে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ টোল আদায়।
স্থানীয়রা বলছেন, বাজারের ব্যাগ থেকে শুরু করে গৃহস্থালীর পণ্য আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে ইচ্ছা মতো আদায় করা হয় টোল। কেউ দিতে না চাইলে করা হয় হেনস্তা। কোনো ব্রিজ না থাকায় ক্ষমতাশালীদের কাছে জিম্মি তারা।
স্থানীয় একজন বলেন, টাকা না দিলে তারা মানুষকে মারধর করে।
আরেকজন বলেন, নৌকাডুবিতে এখানে অনেক মানুষ মারা যায়। একটু বৃষ্টি হলে যাতায়াত করাও কঠিন হয়ে যায়। এখানে ফেরি ঘাটের কোনো সুবিধা নেই। তাহলে কেন আমরা এই টোল দেবো?
তবে টোল আদায়কারীরা বলেন, ‘টাকা তুলছি স্থানীয়দের সুবিধার্থে।’
নৌ পারাপারে ঘাট কিংবা কোনো সুব্যবস্থা না থাকলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বলছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আদায় হচ্ছে টোল।
বিআইডব্লিউটিএ'র যুগ্ম পরিচালক মো. আলমগীর কবির বলেন, কোন ব্যক্তিকে কোন সুবিধা দিতে হবে এবং তার বিনিময়ে সে টাকা দেবে- এরকম কোন বিষয় না। দেশে থাকতে হলে দেশের আইন মানতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ওখানে সিঁড়ি দেয়ার জন্য আমি বলে দিয়েছি। তারপরে সেখানে যদি কোন স্লোভ করার প্রয়োজন হয় সেটাও করে দেবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম-পরিচালক মো. আলমগীর কবির বলেন, ঘাটের সুব্যবস্থাও করা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যক্তিকে এই সুবিধা দিতে হবে, তার বিনিময়ে সে এক টাকা দেবে- বিষয়টা এমন না। দেশে থাকতে হলে দেশের আইন মানতে হবে। ওখানে সিঁড়ি দেয়ার জন্য বলে দিয়েছি। আরও কিছুর প্রয়োজন হলেও সেটা করে দেয়া হবে।
স্থানীয়দের এমন দুর্ভোগ নিরসনে টোল আদায় বন্ধ চেয়েছেন ঢাকা- ১৪ আসনের সংসদ সদস্য আগা খান মিন্টু। তিনি জানান, স্বাধীন দেশে টোল দিতে হবে কেন? এটা বন্ধ হওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। স্থায়ী সমাধন হিসেবে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে দ্রুতই। দ্রুতই এমন দুর্ভোগ নিরসনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার দাবি কাউন্দিয়া ইউনিয়নবাসীর।
বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: