ঢাকা শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১


ভুতিয়ার বিল জলাবদ্ধতা থেকে জেগে উঠছে


প্রকাশিত:
১৩ মার্চ ২০২১ ১৮:৪৩

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৯

তেরখাদা উপজেলার ভুতিয়ার বিল দুই যুগ জলাবদ্ধ থাকার পর ধীরে ধীরে জেগে উঠছে। বিলের ৩০/৩৫ শতাংশ জলাশয় চাষাবাদের উপযোগী হয়েছে। ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের দুইটি ধাপে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বছর বিলের উঁচু স্থানসমূহ জেগে উঠেছে। আগামীতে বিলটি আরো জেগে উঠবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনার তেরখাদা উপজেলা ও নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে ভুতিয়ার বিলের অবস্থান। ১৯৯৬ সাল থেকে ধীরে ধীরে বিলটিতে জলাবদ্ধতা শুরু হয়। ২০০০ সালে বিলের অর্ধেক স্থান পানিতে তলিয়ে যায়। ২০০৩ সালে ভুতিয়ার বিলের প্রায় ২ হাজার একর জমি স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে আশপাশের আরো কয়েকটি স্থান মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার একর জমি জলাবদ্ধ হয়। বিল পাড়ের ৫০টি গ্রামের শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, ভুতিয়ার বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৩ সালে একনেকে ২৮১ কোটি টাকার একটি (দ্বিতীয় পর্যায়ের সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন পায়। ঐ বছরের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল। এ প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ৪৯.২৫ কিলোমিটার আঠারোবাকী নদী খনন, ২৯.১৫ কিলোমিটার চিত্রা নদী খনন, ১১৭.২৫ কিলোমিটার খাল নিষ্কাশন, ৪.০২৫ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ, ১৫.৩৬৫ কিলোমিটার পেরিফেরিয়ান বাঁধ, পাঁচটি স্লুইস গেট নির্মাণ, দুইটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ, ৯টি স্লুইস গেট মেরামত করা হয়েছে। এছাড়া নড়াইল জেলার নবগঙ্গা নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি দেখানো হয়েছে ৯৬ শতাংশ। এ প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষ।

ভুতিয়ার বিলসংলগ্ন নাচুনিয়া গ্রামের গিয়াস খাঁ বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে রয়েছে। বিলের অনেক স্থান জেগে উঠেছে। কোথাও কোথাও এক/দুই ফুট পানি রয়েছে। কয়েক দিন পরে সেসব স্থানও জেগে উঠতে পারে।’

তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এবার ভুতিয়ার বিলে প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে ইরি ধানের চাষ হচ্ছে। গত বছর ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ও ইরি ধানের চাষ হয়। এবছর আরো ৩০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ বেড়েছে।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘ভুতিয়ার বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনে এ পর্যন্ত দুটি প্রকল্প পাশ হয়েছিল। প্রথম প্রকল্প অনেক আগে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকল্পটি এ বছরের জুনে শেষ হবে। বর্তমানে বিলের কোথাও কোথাও দুই/চার ফিট পানি কমে গেছে। আস্তে আস্তে আরো পানি কমবে। দ্বিতীয় প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে আমরা তৃতীয় ধাপে আবারও প্রকল্প তৈরি করব। আশা করি ধীরে ধীরে ভুতিয়ার বিল স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধ মুক্ত হবে।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী বলেন, ‘ভুতিয়ার বিলপাড়ের মানুষের প্রধান আয়ের উত্স কৃষি, মত্স্য ও ব্যবসা। ভুতিয়ার বিল নিয়ে সরকারের বড় পরিকল্পনা রয়েছে। এলাকাবাসীর সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করা হচ্ছে।’


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top