ঢাকা শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


হাকিমপুরে টায়ার পুড়িয়ে জ্বালানি তেল, হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ


প্রকাশিত:
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২৮

আপডেট:
২ মার্চ ২০২১ ০১:১১

টায়ার পুড়তে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ

দিনাজপুরের হাকিমপুরে টায়ার পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে জ্বালানি তেল। এতে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ। মারা যাচ্ছে পশুপাখি, গাছপালা ও মাছ। স্থানীয়দের অভিযোগের পরও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অজ্ঞাত শক্তিতে চলছে এই টায়ার পোড়ানো কারখানা।

হাকিমপুর (হিলি) পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়র্ডের ছাতনী চারমাথা থেকে রাঙ্গামাটিয়া সড়কের পাশে একটি টায়ার পোড়ানো কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানে দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে টায়ার। সেই টায়ার পুড়তে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলজ গাছ।

টায়ার পোড়ানো পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর দিকটি যাতে মানুষ সহজে ধরতে না পারে তার জন্য দিনে না পুড়িয়ে রাতেই টায়ার পোড়ানো হচ্ছে কারখানাটিতে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, টায়ার পোড়ানো কারাখানাটির বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। দিন দিন মারা যাচ্ছে গাছপালা। এছাড়া টায়ার পোড়ানোর উৎকট গন্ধের কারণে এলাকাবাসীর বসবাস প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, শতাধিক ভুক্তভোগী স্বাক্ষরিত হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন কিন্তু প্রতিকার হচ্ছে না।

তরিকুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, 'ওই কারখানার পাশে আমার এক একর জমি রয়েছে। টায়ার পোড়ানোর কারণে আমার জমিতে উৎপাদিত ধানের চালে এক ধরনের দুর্গন্ধ হয়। সেই চালের ভাত খাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ধানগুলো বিক্রি করে বাজার থেকে চাল কিনতে হয়।'

 

অভিযোগকারী হাসন্দর জামান বলেন, 'টায়ার পোড়ানোর কারণে এলাকার ফলগাছগুলোতে ফল ধরছে না।' মশিউর রহমান নামের অভিযোগকারী বলেন, 'কারখানাটির বর্জ্য পাশের তুলশিগঙ্গা নদীতে পড়ায় নদীর মাছ মারা যাচ্ছে।'

মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম বলেন, 'কারখানাটির পাশে আমার জমি রয়েছে। ওখানে টায়ার পোড়ানোর কারণে এক ধরনের দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। ফলে আমার জমিতে কোনো কৃষি শ্রমিক কাজ করতে চান না। বাধ্য হয়ে অল্প টাকায় জমি বর্গা দিয়েছি।'

এ ব্যাপারে কারখানাটির মালিক দিপক কুমারের সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনো বক্তব্য না দিয়ে বলেন, 'আপনার কী সমস্যা সেটা বলেন, সমাধান করা হবে।'

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, 'অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যেহেতু তাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়াপত্র ছাড়া কারখানাটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top