ঢাকা মঙ্গলবার, ২রা জুলাই ২০২৪, ১৯শে আষাঢ় ১৪৩১

বায়ুদূষণে মিথেন গ্যাসের ভূমিকা নেই: সমবায় মন্ত্রী


প্রকাশিত:
৩০ জুন ২০২৪ ১৮:৪০

আপডেট:
২ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩৯

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে বায়ুদূষণে ল্যান্ডফিলের মিথেন গ্যাসের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন করেন ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সাঈদ খোকনের করা লিখিত প্রশ্নের জবাবে রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এই গ্যাস ক্ষতিকারক নয় বলে তাকে আশ্বস্ত করেছেন মন্ত্রী।

কোনো উন্মুক্ত নিচু জায়গা বর্জ্য পদার্থ দিয়ে ভরাট করার পদ্ধতিকে বলে ল্যান্ডফিল বা ভরাটকরণ। মাটির নিচে থাকা বর্জ্যগুলো জৈব ভঙ্গুর বলে এদের পচন হয় এবং তার ফলে এগুলোর ভৌত, রাসায়নিক ও জৈব ধর্মের পরিবর্তন ঘটে। এই প্রক্রিয়া চলার সময় মিথেন, অ্যামোনিয়া প্রভৃতি গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই গ্যাসগুলোকে ল্যান্ডফিল গ্যাস বলে।

ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের স্যানিটারি ল্যান্ডফিল্ড থেকে ক্রমাগত মিথেন গ্যাস নির্গত হওয়ায় রাজধানীর বায়ু দূষিত হয়ে পড়েছে; পরিবেশ দূষণে মিথেন গ্যাস নির্গত হওয়া বন্ধ করার লক্ষ্যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কি না, মন্ত্রীর কাছে জানতে চান সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন।

জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বায়ুদূষণের কারণগুলোর অন্যতম হচ্ছে, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, কলকারখানা ও ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া, এছাড়া নগরায়নের ফলে সৃষ্ট ধূলিদূষণ। বায়ুদূষণে ল্যান্ডফিলের নির্গত মিথেন গ্যাসের প্রভাব আশঙ্কাজনক নয়। মিথেন গ্যাস নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্যানিটারি ল্যান্ডফিল ও বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন সংক্রান্ত প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

বেলা ১১টায় শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম প্রশ্ন করেন, দেশে বর্তমানে যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদন হয়; তার ৩০ শতাংশের বেশি হয় রাজধানীতে। এই বর্জ্যকে রিসাইকেলিং করে দূষণরোধসহ সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব। সরকার এই বিষয়ে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেছে কি না?

জবাবে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে থ্রি আর (রিডিইউস, রিউইস ও রি সাইকেল) কৌশল পরিকল্পনায় বর্জ্য থেকে শক্তি উৎপাদন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

নিরাপদ পানি সরবরাহ নিয়ে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশের ৯৮ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি সরবরাহের আওতায় এসেছে। অবশিষ্ট জনগণ দূরবর্তী স্থান থেকে নিরাপদ পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অভীষ্ট-৬ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে গ্রামাঞ্চলে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৩০৯টি পানির উৎস স্থাপন, ২ লাখ ৩০ হাজার ৩৮টি রেইন ওয়াটার হারভেস্টর স্থাপন, ৫৬০টি রুরাল পাইপড ওয়াটার স্কিম নির্মান ও ১৫ হাজার ১৯৯টি মিনি/কমিউনিটি ভিত্তিক পানি সরবরাহ ইউনিট স্থাপন। এছাড়া শহরাঞ্চলে গৃহীত কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩৯টি পানি শোধনাগার নির্মাণ, ৮০৯টি উৎপাদক নলকূপ স্থাপন ও ২ হাজার ৭৪২ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন।

কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম জানান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন এলজিইডির আওতায় দেশব্যাপী প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, সংস্কার ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪ হাজার ৭৮০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন, ১৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, ২১ হাজার মিটার ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ, ১৯ হাজার মিটার ব্রিজ/কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণ, ৯০টি গ্রোথ সেন্টার/হাটবাজার উন্নয়ন, ৫০টি সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ, ২৫টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন, ৪০০ কিলোমিটার খাল খনন/পুনঃখনন, ৫০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া নগর অঞ্চলে ৫০৭ কিলোমিটার সড়ক/ফুটপাত নির্মাণ, ১৮০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ৩৫টি ট্যাট্রিন নির্মাণ, ২টি বাস/ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, ৩৫ কিলোমিটার সড়ক মেরামত ও ৪ হাজার ৩৫০টি স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top