ঢাকা শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার ১০ শতাংশ এলাকায় ডেঙ্গুর ঝুঁকি বেশি


প্রকাশিত:
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৭

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৩

ফাইল ছবি

পরিবেশ টিভি: ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন মিলিয়ে অন্তত ১০ শতাংশ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। গত ডিসেম্বরে পরিচালিত বর্ষা-পরবর্তী জরিপে উঠে আসা প্রতিবেদনের এই চিত্র রোববার স্বাস্থ্য অধিদফতরে আয়োজিত এক কর্মশালায় তুলে ধরা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১২ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি  করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০ শতাংশ ওয়ার্ডে এডিসের লার্ভার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।

বর্ষা মৌসুমের এডিস মশাবাহিত এ রোগ এখন সারা বছরের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে সারা দেশে। আগে ডিসেম্বর-জানুয়ারি সময়ে ডেঙ্গু হওয়ার ঘটনা ছিল কম। এবার জানুয়ারি মাসে নগরীতে এডিস মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গতবারের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি রোগী।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিএনসিসির ১২, ১৬, ২৮, ৩১ ও ১ এবং ডিএসসিসির ৫, ৬, ১১, ১৭, ৩৭ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো সূচক মিলেছে ২০ পয়েন্টের বেশি। উত্তরের শুধু ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এই সূচক ৩০। আর উত্তরে ৪১ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৯টি ওয়ার্ডে এ জরিপ চালানো হয়েছে। ডিএনসিসির উত্তরা ও ধানমন্ডির দুটি ওয়ার্ডে দুটি করে এলাকায় জরিপ হয়েছে। জরিপ করা হয়েছে এসব এলাকার ১ হাজারটি বাড়ি। মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্স বা সূচকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি একশ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি বলা যায়।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সালে বর্ষা-পরবর্তী জরিপ হয়নি। তবে সবগুলো ইনডেক্সেই ২০১৭ সালের চেয়ে এবার উপস্থিতি কম। মশার উপস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা আগের বছরের তুলনায় কম পেয়েছি।

ঢাকা জুরাইন এলাকায় নির্মিত ফ্লাইওভারের নিচে জমে থাকা পানি হয়ে উঠছে মশার আবাস।

মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনন উৎসে নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যদি পানি জমতে দেওয়া না হয় তাহলে মশার লার্ভাই হতে পারবে না। মশার যদি উৎস ধ্বংস না করা হয়। তাহলে শুধু লার্ভিসাইডিং করে মশা কমানো যাবে না। নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসী, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন, ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার ও রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বেনজির আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

২০১৯ সালে রেকর্ডসংখ্যক ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইইডিসিআর ২৬৩টি মৃত্যুর তথ্য পাওয়ার পর তার মধ্যে ১৬৪ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুর কারণে হয়েছে বলে নিশ্চিত করে।


বিষয়: ডেঙ্গু



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top