ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

জেগে ওঠা চরে নদীভাঙন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি


প্রকাশিত:
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:২০

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৫৩

ফাইল ছবি

পরিবেশ টিভি: নড়াইলের কালিয়া পৌরসভার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট এলাকার নদীর তীরে জেগে উঠেছে বৃহৎ চর। এই চরেই প্রায় ১৭ কোটি টাকার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি নামমাত্র বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে অভিযোগ।

পাউবো ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালিয়া পৌরসভার পশ্চিম কোলঘেঁষে নবগঙ্গা নদী প্রবাহিত। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নদীর তীর সংলগ্ন এলাকা বড় কালিয়া, নাওরা ও বৃহাচলা গ্রামে প্রায় দুই দশক আগে থেকে ভাঙন দেখা দেয়। পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যায়ক্রমে ঠিকাদারের মাধ্যমে একের পর এক প্রকল্পের মাধ্যমে ভাঙন রোধে কাজ করেছে। সে সব প্রকল্পে এলাকার সর্বস্তরের মানুষের আংশিক উপকার হয়েছে। কিন্তু ওই ভাঙন এলাকার উত্তরের প্রবল ভাঙন রোধের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।

প্রাকৃতিকভাবে দুই বছর আগে নদীর তীরের পৌরসভার বড় কালিয়া, নাওরা ও বৃহাচলা গ্রামের ওই চরের ওপরই শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নে নড়াইল পাউবো ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বরে দরপত্র চূড়ান্ত করে। এতে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের কাজটি পেয়েছেন খুলনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন অ্যান্ড কোং। এ প্রকল্পটি ৩টি অংশে ভাগ করা হয়। ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে নড়াইলের ঠিকাদার লাভলু সরদার প্রকল্পের দক্ষিণ অংশ এবং খুলনার ঠিকাদার রনি বাকি ২টি অংশে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন।

অভিযোগ, ভাঙনকবলিত এলাকায় চর জেগে ওঠায় ওই প্রকল্পটি এখন অপ্রয়োজনীয় ও অবাস্তব। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ মাস আগে তড়িঘড়ি করে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। আজব ব্যাপার হচ্ছে, ইতোমধ্যে শুধুমাত্র জেগে উঠা চরের ওপর সামান্য কিছু ব্লক ফেলেই নদী ভাঙন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা ইতোমধ্যে হাতিয়ে নিয়েছেন। স্থানীয়রা মনে করছেন সামান্য কিছু কাজে কোটি কোটি টাকা ব্যয়- এটা অসম্ভব ব্যাপার। ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের যোগসাজশে লুটপাট করেছে কাজটিতে। দুই বছর আগে থেকেই এখানে চর পড়া শুরু হয়। এরপরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জেনেশুনে সরকারি টাকা অপচয় তথা আত্মসাতের উদ্দেশে এমন কাগুজে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে! অর্থাৎ সরকারি প্রায় ১৭ কোটি টাকা ‘দরিয়া’তেই ঢালা হচ্ছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পটির নির্দিষ্ট স্থান নদী তীরবর্তী এলাকা জুড়ে বৃহৎ বালু চর দুই বছর আগে জেগে উঠেছে। জেগে ওঠা বৃহৎ চরের ওপরই সামান্য কিছু ব্লক ফেলা হয়েছে। সেখানে বালুর বস্তা ফেলার কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। প্রকল্পে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সচেতন মহল বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে নড়াইল জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহানেওয়াজ তালুকদার বলেন, এ প্রকল্প বাতিল বা স্থানান্তরের কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top