দ্বিতীয় দফায় সুনামগঞ্জে বন্যা

দ্বিতীয় দফায় ১২ দিন পর সুনামগঞ্জ বন্যার মুখে; পানি নেমে যাওয়া এলাকা আবারও প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও জেলায় একদিনের রেকর্ড বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী-২ ইমদাদুল হক জানান, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি দুপুরে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ থাকায় নদীর পানি কিছুটা কমছে।
তিনি বলেন, সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে; যা এ জেলায় বছরের রেকর্ড।
মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। এ কারণে আবারও বন্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।
তিনি বলেন, এদিকে যাদুকাটায় ২১১, ছাতকে ২২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ছাতক পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি ও যাদুকাটা নদীর পানিও বিপৎসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।
এদিকে সোমবার তাহিরপুরে সূত্রখলায় ২০০ মিটার জায়গা তলিয়ে ওই উপজেলা এবং বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের সরাসরি যাতায়াত বন্ধ রয়েছে।
ফলে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। একই সঙ্গে নতুন করে বাসা-বাড়িতে পানি ওঠায় মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, “দুদিনের ভারি বর্ষণে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, সদর ও জামালগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
“তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাসা-বাড়িতে পানি ওঠায় মানুষ দুর্ভোগে আছেন।”
সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বৃদ্ধ আব্দুল আজিজ কাছা মিয়া বলেন, “এখন পানির উপর পানি। আবার ঘরবাড়িতে পানি ডুকছে। রাস্তাঘাট ডুবছে। আমাদের কষ্ট বাড়তেছে। ক্ষতি হইতাছে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, বন্যার্তদের জন্য ৬৯৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্বম্ভরপুরে কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
প্রতিটি উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ মেট্টিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান এই জেলা প্রশাসক।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: