ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১

ঝড়ের আঘাতে পিরোজপুরে জনজীবন বিপর্যস্ত


প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৭

আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৫৯

পিরোজপুরে হঠাৎ করে আঘাত হানা কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পিরোজপুর সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ৩টি উপজেলায় ৩১ ঘণ্টা পরেও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। স্বল্প পরিসরে পিরোজপুর শহরে রাতে বিদ্যুৎ লাইন চালু করা গেলেও, অধিকাংশ এলাকাই রয়েছে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।

এতে করে ভোগান্তি নিরসনে অতি দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবী জণসাধারণের। অন্যদিকে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শতাধিক পরিবারকে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

প্রচণ্ড ঝড়ে লণ্ড ভণ্ড হয়ে যায় পিরোজপুর সদর উপজেলার পৌর এলাকা এবং শারিকতলা ইউনিয়ন। এর প্রভাব পড়ে পার্শ্ববর্তী কাউখালী ও ইন্দুরকানী উপজেলায়ও। সদর উপজেলার দক্ষিণ মরিচাল গ্রামে ঘরের উপর গাছ পড়ে চাপা পড়ে মারা যায় এক নারী এবং একই এলাকায় পানিতে পড়ে মারা যায় আরেক বৃদ্ধ।

এছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে কমপক্ষে ১২ জন। অন্যদিকে ঝড়ে গাছে থাকা আম, লিচু সহ অন্যান্য ফলের গুটি এবং গাছে থাকা কলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

তবে ঝড়ের পর থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পিরোজপুর সদর, কাউখালী, ইন্দুরকানী ও ভান্ডারিয়া উপজেলা। তবে জেলা ও উপজেলা শহরগুলোতে স্বল্প পরিসরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হলেও, অধিকাংশ এলাকাই রয়েছে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।

পিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে মৃত্যু বেড়ে ২, বিদ্যুৎহীন লক্ষাধিক মানুষপিরোজপুরে কালবৈশাখী ঝড়ে মৃত্যু বেড়ে ২, বিদ্যুৎহীন লক্ষাধিক মানুষ
এছাড়া প্রধান সড়কগুলো থেকে ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ অপসারণ করা সম্ভব হলেও, গ্রামাঞ্চলের অনেক রাস্তাঘাট এখনও যান চলাচলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী হয়নি। এতে করে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

হঠাৎ ঝড়ে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় কোটি টাকা জিনিসপত্রে ক্ষতি হয়েছে। যে কারনে দির্ঘ ৩১ ঘন্টা পরেও স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। স্থানীয়দের আমূল ক্ষতি হলেও এখনো ক্ষতি নির্নয় করা সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, পিরোজপুর সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৩০ ঘন্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় ভোগান্তিতে লক্ষাধিক পরিবার। এটিএম বুথে টাকা তোলা, মটোর চালিয়ে পানি তোলা, ইন্টারনেট সেবা ব্যহত সহ বহুবিধ সমস্যা মধ্যে রয়েছে তারা। অতি দ্রুত গাছ কেটে অপসরন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দাবী ভুক্তভূগীদের।

পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ, সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু উমাম মো. মাহবুবুল হক জানান, ঝড়ে পিরোজপুরের বিভিন্ন উপজেলাতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে, ৮০টি ক্রসআর্ম ভেঙ্গে গেছে, ৯৪ টি ইনসুলেটর, দুই শতাধিক মিটার, ১০টি বেশি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও অনেক স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো ঝুঁকে পড়েছে। এতে কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। কত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া সম্ভব তা এখনো বলা যাচ্ছে না।

পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাধবী রায় জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমান নিরুপণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থদের তাৎক্ষণিকভাবে সহযোগীতা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া সন্ধ্যার মধ্যে অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে বলেও আশা তার।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top