ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

পলিথিন জঞ্জালে কাজ করছে না ড্রেজার


প্রকাশিত:
২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৩৩

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ২১:৫০

ফাইল ছবি

পরিবেশ ডেস্ক: চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ আবারও সঙ্কটের মুখে পড়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। নদীর বিশ ফুট গভীরেও পলিথিনের বিশাল স্তর। পলিথিনের এই জঞ্জাল সরিয়ে মাটি তুলতে পারছে না ড্রেজার। বারবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ড্রেজারের কাটার। একটি অচল হয়ে গেছে।

সারাদিনে এক দেড় ঘণ্টার বেশি কাজে লাগানো যাচ্ছে না অন্য দুটি ড্রেজার। চীনা যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এ কাজ করছে তারা বলেছে, কাটার প্রযুক্তি দিয়ে নদীর তলদেশ থেকে মাটি তুলে আনা সম্ভব নয়। এ জন্য গ্রেভ শিপ প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ করতে গেলে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাবে, যা অনুমোদন সাপেক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানান, ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সদরঘাট টু বাকলিয়া চর ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প’ কাজটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় নৌবাহিনীকে। গত বছর ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে তিনটি বড় আকারের ড্রেজার নিয়ে কাজ শুরু করে নৌবাহিনী। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে পদে পদে বিঘ্ন ঘটে খনন কাজে। পলিথিন, চিপসের প্যাকেটসহ অপচনশীল বর্জ্যরে কারণে খনন কাজ দুঃসাধ্য হয়ে পড়লে চীন থেকে আনা হয় আধুনিক স্যাকশন ড্রেজার।

চীনের ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি তিনটি ড্রেজার চীন থেকে নিয়ে এসে কাজ শুরু করে চলতি বছর মার্চ মাসের শেষের দিকে। বলা হয়েছিল স্যাকশন ড্রেজার দিয়ে খনন কাজে গতি আসবে। কিন্তু এক বছর তিন মাস সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও প্রকল্প কাজে অগ্রগতি বলতে তেমন কিছু হয়নি। এ সময়ের মধ্যে যেখানে প্রকল্প কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা সেখানে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। এ অবস্থায় এসে চীনা কোম্পানির নতুন প্রস্তাব দিল গ্রেভ শিপ প্রযুক্তি নিয়ে আসার। প্রস্তাবটি এখনও পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে।

এর আগে ২০১২-১৩ সালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প কাজ শুরু করে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ না করেই ১৪০ কোটি টাকা বিল তুলে নিয়ে বিদেশে পালিয়ে যায়। এ নিয়ে মামলা-পাল্টা মামলায় ঝুলে যায় প্রকল্পের কাজ। জটিলতা এড়াতে তাই নতুন নামে নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় নৌবাহিনীকে।

বুয়েটের সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার চওড়া এলাকায় ড্রেজিং করে ৪২ লাখ ঘনমিটার বালি ও মাটি তোলার কথা। কিন্তু কাজের প্রধান প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে পলিথিনের জঞ্জাল। তাই এই প্রকল্প কাজ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেছেন, ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজ এগিয়ে চলেছে। তবে পলিথিন জঞ্জালের কারণে সমস্যা হচ্ছে। এই বাধা কাটিয়ে কীভাবে কাজ শেষ করা যায় তা নিয়ে বুয়েটের মতামত নেওয়া হবে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top