হাজার কোটি টাকা খরচের পরও ডুবল সিলেট শহর

ভারী বৃষ্টিতে আবারও ডুবল সিলেট নগরের শতাধিক এলাকা। বাসাবাড়ি, দোকানপাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডুবে যায় রাস্তাঘাট। গতকাল সোমবার বিকেলের দিকে কয়েকটি এলাকার পানি নেমে গেলেও অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দারা ছিলেন পানিবন্দী। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় লোকজন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র বলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে গত ১৪ বছরে ১ হাজার ৭৮ কোটি টাকার কাজ করেছে সিটি করপোরেশন। এর বাইরে চলতি বছর তিনটি ড্রেন নির্মাণে খরচ হয় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। পাশাপাশি আরও ৫৫ কোটি টাকার কাজ চলছে। সম্প্রতি ৩০০ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। এ ছাড়া পাউবো সুরমা নদীর নগর অংশ খননে খরচ করছে ৫০ কোটি টাকা।
সোমবার সিলেট নগরে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেওয়ার পর নগরের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, জলাবদ্ধতা দূর করতে সিটি কর্তৃপক্ষ ও পাউবো বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এতে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়ার বদলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে জলবদ্ধতার সংকট আরও বেড়েছে। তাহলে এত টাকা খরচ করে নগরবাসীর কী লাভ হলো, এ নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে নগরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর ঠিক দুই বছর পর গতকাল আবারও নগরে একই চিত্র দেখা যায়।
হাজার কোটি টাকা খরচের পরও নগর জলমগ্ন হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী (কিম)।
রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে নগরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হতে থাকে। ভোর হওয়ার আগেই শতাধিক এলাকা তলিয়ে যায়। এতে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি হয়। ফলে বাসাবাড়ি, দোকানে পানি ঢোকে। ডুবে যায় অনেক সড়ক।
নগরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, যদি নদী ও প্রাকৃতিক খাল পরিকল্পিতভাবে আরও সুগভীর করার পাশাপাশি অবৈধ দখলমুক্ত করে খনন করা হতো, তাহলে নগরের বন্যা পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ রূপ নিত না। নগর দিয়ে প্রবাহিত ছড়া ও খালগুলো যথাযথ খননের অভাবে পানির ধারণক্ষমতা হারিয়েছে।
পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতাদের আশঙ্কা, নদী খনন নিয়ে কোনো নজরদারি না থাকায় খনন প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা পানিতে যাবে বলে তাঁরা আশঙ্কা করেন।
এদিকে সুনামগঞ্জে বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। জেলার ছাতক উপজেলায় সুরমাসহ অন্যান্য নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: