ঢাকা সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩১


বান্দরবানের সবুজ পাহাড়ে জুমের ফসল তোলার ব্যস্ততা


প্রকাশিত:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:০১

আপডেট:
৬ মে ২০২৪ ০৭:৩৮


বান্দরবানের পাহাড়ি জুমখেতে এখন শোভা পাচ্ছে সোনালি ধান। অনেকে সেই ধান কাটতে শুরু করেছেন। ফসল ঘরে তোলার আনন্দে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হবে নবান্ন উৎসব। তবে অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ধসের ঘটনায় ফলন আগের মৌসুমের চেয়ে কম হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে জুমখেতে লাগানো অন্যান্য সবজির ওপরও।

জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা, আলীকদমসহ সাতটি উপজেলার প্রায় সবগুলো পাহাড়ি পরিবার জুমচাষের সঙ্গে জড়িত। মারমা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, খুমি, লুসাই, পাংখো, বম, চাকসহ ১১টি সম্প্রদায়ের মানুষ জুমচাষের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। খেতে উৎপাদিত ধান দিয়ে বছরের অন্তত আট মাস নিজেদের খাদ্যের চাহিদা মেটান।

সদরের বাঘমারা এলাকার জুমচাষি মং মারমা জানান, এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে জুমের ফসল আশানুরূপ হয়নি। এরপরও জুমের ধান নিজেদের জন্য কিছু রেখে বাকিটা বিক্রি করে টাকা আয় করবেন।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে ৮ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমিতে জুমের ধান চাষ হয়েছিল। উৎপাদিত হয় ২০ হাজার ২০০ টন। চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ৯৩৩ হেক্টর জমিতে আবাদের বিপরীতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার ৮৭ টন।

প্রতিবছর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে শুরু হয় জুমখেতে ধান লাগানোর প্রক্রিয়া। প্রায় তিন-চার মাস পরির্চযার পর সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে পাহাড়ে জুমের ধান কাটা শুরু হয়। চলে অক্টোবর পর্যন্ত।

তাই জুমের ফসল ঘরে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে পাহাড়ি পরিবারগুলো। ধান কাটতে অনেক পরিবার খেতের ধারে মাচা করে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। জুমে ধানের পাশাপাশি ভুট্টা, মরিচ, যব, সরিষা, চাল কুমড়া, বেগুন, কাকন ধান, মারপা, তিল, পুঁই ও টক পাতাসহ হরেক রকমের সবজির চাষ হয়েছে। ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুমচাষ করে ম্রো সম্প্রদায়। তারা আদিকাল থেকে এখনো জুমচাষের মাধ্যমে সারা বছরের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।

থানচির দিনতেপাড়ার বাসিন্দা দৈ লাং ম্রো বলেন, যখন বৃষ্টির প্রয়োজন, তখন বৃষ্টি হয়নি। আবার যখন বৃষ্টির প্রয়োজন নেই, তখন ছিল অতিবৃষ্টি। এ জন্য এবার ধান তেমন ভালো হয়নি। ৪০ শতক জায়গায় ১২ আড়ি ধান বপন করেছিলেন। সেখান থেকে ৬০০ আড়ি ধান পাওয়ার কথা, কিন্তু মনে হচ্ছে ৪০০ আড়ি ধান পাবেন।

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এম এম শাহনেয়াজ বলেন, এপ্রিলের শুরুর দিকে যেসব চাষিরা ধানবীজ বপন করেছিলেন, তাঁদের ফলন ভালো হয়েছে। শেষ দিকে যাঁরা বীজ বপন করেছিলেন, তাঁদের ফলন ঘরে তুলতে দেরি হতে পারে।

 


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top