ঢাকা বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


কৃষকরা ধানচাষে লোকশা গুণছেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রচন্ড খরায় জমি ফেটে চৌচির


প্রকাশিত:
২৪ জুলাই ২০২৩ ২১:০৪

আপডেট:
৮ মে ২০২৪ ১৯:০৭


বরেন্দ্র অঞ্চল নামে খ্যাত রাজশাহীর বাগমারায় বৃষ্টির ভরা মৌসুমে বৃষ্টির কোন দেখা মিলছে না। প্রচন্ড খরায় রোপনকৃত রোপা-আমন জমি ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির অভাবে অনেক জমি চাষ দিতে পারেনি কৃষকরা। অতিরিক্ত খরার কারণে রোপা-আমন চাষ নিয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।

মৌসুমের বৃষ্টির উপর অনেকটা রোপা-আমন ধান চাষ নির্ভরশীল এলাকার কৃষকরা। কিন্তু এবারে বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা রোপা-আমন চাষ নিয়ে উদ্বিঘœ হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টির অভাবে সেচ দিয়ে চাষ আবাদ করতে হচ্ছে। পানি সংকটে রোপণকৃত জমি ফেটে চৌচির হয়ে ধান মরে যাচ্ছে।

এছাড়া সেচ কাজের ভাড়া, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে সেচযন্ত্রের ভাড়া দিতে কৃষকরা বেশামাল হয়ে পড়েছে। লোকশানের বোঝা মাথায নিয়ে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে আবারো রোপা-আমন চাষে নেমেছে। ধানের মূল্য হ্রাসে উৎপাদন খরচ জুটছে না। ফলে কৃষকরা ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে মুলধন হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।

অনেকেই মহাজন ও ব্যাংক ঋণের টাকায় ফসল করে ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ভিটে মাটি বিক্রি করে নিঃশ্ব হতে বসেছেন। কৃষককের দাবি কৃষি উৎপাদনের প্রধান উপকরণ সার, ডিজেল ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে প্রতি নিয়তই কিন্তু কৃষকদের কৃষি পণ্যের দাম বাড়ছে না। এতে কৃষি ফসল উৎপাদন করে বেশী লোকশান গুনছেন। দু’ দফা সার দাম বেড়েছে। সরকার গ্রাম পর্যায়ের কৃষকদের কথা না ভেবে কৃষি উপকরণের দাম বাড়িয়ে চলেছে।

গ্রামের কৃষকদের অবলম্বন কৃষি। অন্য কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আদি পেশা কৃষি উৎপাদনে মওসুমে রোপা-আমন চাষ অব্যাহত রেখেছেন।

জানা যায়, এ এলাকার লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। প্রতি বছরের ন্যায় কৃষকরা এবারেও বুক ভর আশা নিয়ে কৃষি কাজে নামে। উপজেলার বালানগর গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান,চার যুগ ধরে তিনি কৃষি কাজ করে আসছেন। কিন্তু এ বছরের ন্যায় এত ধানের লোকশানের মুখ কখনও তিনি দেখেননি।

তিনি জানান, পেঁয়াজ, ধান, পাট, সবজির দাম কমছে। অন্য দিকে বাড়ছে সার, কীটনাশক ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের দাম। এ অবস্থায় মওসুমে আবারো রোপা-আমন চাষ করতে হবে। মহাজনেরর ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারিনি এ অবস্থায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি অনেক কৃষকই। পাওয়ারটিলারের ডিজেল খরচ, শ্রমিক খরচ দিয়ে ১ বিঘা জমিতে ১৭/১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। যে ধান ১৪০০/- টাকা থেকে ১৫০০/- টাকায় বিক্রি হবার কথা তা না হয়ে মাত্র ১০০০/- টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। ধান উৎপাদনে উপকরনের দাম বৃদ্ধিতে ক্যাশ টাকা ফুরিয়ে ঋণের জালে আটকা পড়ে দিশেহারা হচ্ছেন গ্রামের কৃষকরা।

একই ভাবে নন্দনপুর গ্রামের কৃষক আজগর জানান, গত বছর ধানের ভালো ফলন ও দাম পেয়ে বেশী লাভের আসায় এবারে বেশী আমন-রোপা ধান চাষে করতে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতিতে বসেছেন। ৩ বিঘা ধান চাষে ৩০ হাজার টাকা তার লোকশান গুণতে হবে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন। এবারে ধানের চাষে গত বারের তুলনায় বেশী খরচ হবে জেনে তিনি শুধুমাত্র খাবার পরিমান ধান চাষ করবেন বলে জানান তিনি।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top