মেহেরপুরে ক্যাপসিকামের বাণিজ্যিক চাষ
![](https://poribeshtv.com/uploads/shares/2021/FB_IMG_1608105750134-800x445-2021-03-14-17-50-41.jpg)
মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়েছে ক্যাপসিকামের। এর চাষে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। ফলনও হয়েছে ভালো। কৃষি উদ্যোক্তারা বলছেন, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত ও চাষটি ছড়িয়ে দিতে পারলেই কমবে আমদানি নির্ভরতা। কৃষি বিভাগ বলছে, সবজিটির চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করা হচ্ছে।
ক্যাপসিকাম বা কারো কারো ভাষায় মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় সবজি। বিশ্বজুড়ে রয়েছে এর জনপ্রিয়তা। দেশীয় সবজি না হলেও এখন এ সবজির চাষ করা হচ্ছে মেহেরপুরে। নতুন কিছু করার প্রত্যয় নিয়ে মেহেরপুরের বেন ইয়ামিন মুক্ত দুই প্লটে এক বিঘা জমি নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু করেন ক্যাপসিকামের।
অনেক পরিশ্রমের পর এখন গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে সবুজ ক্যাপসিকামের। বিক্রিও শুরু করেছেন। নিবিড় পরিচর্যা ও সময়মত ওষুধ প্রয়োগ করতে পারলে এ সবজির চাষ জেলায় সম্প্রসারণ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তবে প্রয়োজন আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে উৎপাদিত ক্যাপসিক্যাম বাজার নিশ্চিত করা। সফল চাষ দেখে অনেকেই এগিয়ে আসছেন ক্যাপসিকাম চাষে।
ক্যাপসিকাম চাষি বেন ইয়ামিন মুক্ত জানান, ক্যাপসিকামের বীজ বপন করার এক মাস পর চারা তৈরি হয়। চারা উপযুক্ত হওয়ার পর জমি তৈরি করতে হয়। চারা রোপণের আগে পলিথিন দিয়ে বেড তৈরি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ফাঁকা রেখে গাছের চারা বপন করতে হয়।
২ বিঘা জমিতে প্রায় এক হাজার পাঁচশত গাছ রয়েছে। বীজ বপনের পর গাছগুলো নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। গাছ লাগানোর ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল আসার ২৫ দিনের মধ্যে ফল বিক্রির উপযুক্ত হয়। কয়েক মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায় এ গাছ থেকে। এ বছর সবুজ ক্যাপসিকামের চাষ করেছি। আগামীতে লাল রঙের ক্যাপসিকামের চাষ করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এ বছর অল্প পরিসরে তিনি এ মরিচের চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি ফলের ওজনও ভালো হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় দামও ভালো। আগামীতে কয়েকগুণ বাড়িয়ে এ মরিচের চাষ করবেন বলে জানান তিনি।
মেহেরপুর “লা ভোগ” রেস্টুরেন্টের মালিক আনারুল ইসলাম কালু ও অভারটার্ম রেস্টুরেন্টের মালিক সৌরভ হোসেন জানান, ‘‘চায়নিজ খাবার তৈরির জন্য আগে ঢাকা থেকে ক্যাপসিকাম ক্রয় করতেন। খরচও পড়তো অনেক বেশি। কিন্তু এখন মেহেরপুরে ক্যাপসিকাম পাওয়া যাচ্ছে। দামও হাতের নাগালে।’’ এখন নিজ জেলা থেকে কম দামে সবজিটি কিনতে পেরে খুশি তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা চায়না পারভিন জানান, মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ শুরু হয়েছে। এটি লাভজনক চাষ। চাহিদাও রয়েছে বাজারে। জেলাব্যাপী ক্যাপসিকাম চাষ ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কাজ করছে। ক্যাপসিকামের মাঠ ঘুরে দেখেছি।
গাছগুলো ভালো হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। এটি সবজি হিসেবে যে কোনো খাবারের সঙ্গে খাওয়া যায়। ক্যাপসিক্যামে মরিচের মত গন্ধ থাকলেও খাওয়ার সময় ঝাল লাগে না। প্রচুর পুষ্টিগুণ আছে বিদেশি এ সবজিটিতে। এর চাষ বাড়াতে ও বাজারজাত করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
বিষয়: কৃষি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: