ঢাকা রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৫শে ভাদ্র ১৪৩১


পরিবেশ বিপর্যয়ে পেশা বদলাচ্ছেন কৃষক


প্রকাশিত:
৫ জুন ২০২৪ ১৪:২৬

আপডেট:
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৮

ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙনসহ পরিবেশগত বিভিন্ন বিপর্যয়ের কারণে দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততা বাড়ছে। আবার ঠিক দেশের উল্টোপাশে উত্তরাঞ্চলে প্রাকৃতিক কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে। এ সংকট প্রকট বরেন্দ্র এলাকায়। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার বেশিরভাগ জায়গাজুড়ে খাবার পানি পাওয়া দুষ্কর। চাষাবাদের জন্যও পানি যাওয়া যাচ্ছে না। নদীগুলোতেও প্রয়োজনের সময় থাকে না পর্যাপ্ত পানি। ফলে অনেকে চাষাবাদ ছাড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জীবন-জীবিকা চারটি খুঁটির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে, যার অন্যতম কৃষি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে কৃষি ছাড়ছেন। কেউ কেউ চাষাবাদের ধরন পরিবর্তন করছেন।

দক্ষিণাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগরের চাষি ফজলে মিয়া শেষ বয়সে এসে দিয়েছেন মুদি দোকান। লবণাক্ততার প্রভাবে এখন আর তার ফসলি জমিতে চাষাবাদ হয় না। জমিগুলো পরিত্যক্ত। সুন্দরবনঘেঁষা এ জনপদের অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন, পরিবর্তন করছেন পেশা।

ফজলে মিয়া বলেন, ‘একবার জমিতে লবণ পানি ঢুকলে কয়েক বছর চাষাবাদ করা যায় না। এ এলাকায় সামান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই লবণ পানি প্রবেশ করে কৃষিজমিতে। তখন চিংড়ির ঘের ছাড়া বিকল্প কিছু করা যায় না। কিন্তু সে সামর্থ্য অধিকাংশ দরিদ্র চাষির নেই। তখন বাধ্য হয়ে কৃষিকাজ ছাড়তে হয়। এমনকি গরু-ছাগল পালন করাটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। কারণ জমিতে ঘাস, গাছপালাও হয় না।’

নওগাঁর মান্দা উপজেলার কৃষক মাহাবুব হোসেন বাদশা জানান, একসময় পাঁচ বিঘা জমিতে নিজে চাষাবাদ করতেন। ক্রমাগত সেচ খরচ বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে কৃষিকাজ করে এখন সংসার চলছে না তার। তাই ঢাকায় এসে ইজিবাইক চালাচ্ছেন।

তিনি বলেন, ‘সেচের সময় পানি পাই না। বরেন্দ্র অঞ্চলে যারা পানি দেন, তারা অরাজকতা করেন। বেশি টাকা নিয়েও পানি দেন না। ফসলের ফলন ঠিকমতো হয় না। আমার মতো যারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিল, তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। একমাত্র ধানচাষ করে বেশিরভাগ সময়ই লোকসানে পড়তে হচ্ছে। আর পানির অভাবে তো অন্য ফসল করাও যায় না।’

উষ্মা জানিয়ে বাদশা বলেন, ‘ইজিবাইক চালিয়ে আয় করছি। আগে কৃষির সঙ্গে আমাদের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বাপ-দাদার পেশা। কিন্তু সেটা দিয়ে আর সংসার চালানো যাচ্ছে না।’

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কৃষিকাজ ছেড়েছেন ১৫ লাখ ৮০ হাজার মানুষ।

বিভিন্ন হতাশার কারণে তারা এ পেশাই ছেড়ে দিয়েছেন। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, আয়ের বৈষম্য, যান্ত্রিকীকরণের কারণে কাজের ক্ষেত্র কমে যাওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কারণে কৃষি পেশা ছাড়ছে মানুষ। অনেক কৃষকই এখন নিজের দেশে চাষ করার বদলে বিদেশে গিয়ে অন্যের জন্য ফসল ফলাচ্ছে। বর্তমানে বিদেশে কর্মসংস্থানের উদ্দেশে যাওয়া কর্মীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশই যাচ্ছেন কৃষিকাজে।

বিবিএসের সবশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে ১১ বছরের ব্যবধানে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে কৃষকের সংখ্যা। ২০২২ সালের জনশুমারিতে ৩৭ দশমিক ৯১ শতাংশ কৃষিশ্রমিক ছিল, যেখানে ২০১১ সালের শুমারিতে এ হার ছিল ৪৭ দশমিক ০৩ শতাংশ। অর্থাৎ এসময় কৃষক কমেছে ৯ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে তথ্য এও বলছে, ওই ১১ বছরে শুধু কৃষিতেই শ্রমিক কমেছে। শিল্প ও সেবাখাতে উল্লেখযোগ্য হারে শ্রমিক বেড়েছে।

এদিকে পরিবেশ ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে আশঙ্কাজনকভাবে কৃষকের সংখ্যা কমার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন। বর্তমানে গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, শীতকালে মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডা ও অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি, বর্ষাকালে বৃষ্টিহীনতা, অকাল ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি এদেশের আবহাওয়া পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব। এসব কারণে কৃষিজমির উর্বরতাও দিন দিন কমে যাচ্ছে। যাতে আগামী দিনে খাদ্য উৎপাদন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

চলতি বছরও প্রচণ্ড গরমের কারণে পুকুরে মাছ মরেছে। মৃত্যু হচ্ছে হাঁস-মুরগিসহ গবাদিপশুর। গরমের কারণে ফসল কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যায়নি অনেক এলাকায়। বন্যা ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে ফসলের। সবশেষ ঘূর্ণিঝড় রিমালে কৃষির বড় ক্ষতি হয়েছে। একই বছরের মধ্যে এমন বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কৃষিখাতের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার বড় ভুক্তভোগী কৃষক।

তথ্য অনুযায়ী, মোট দেশজ উৎপাদনে কৃষিখাতের অবদান প্রায় ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। শ্রমশক্তির প্রায় ৪১ শতাংশ কৃষিখাতে বিভিন্নভাবে নিয়োজিত। আর দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বের চাষাবাদযোগ্য ভূমির মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ রয়েছে বাংলাদেশে। এই অল্প পরিমাণ আবাদযোগ্য ভূমি নিয়ে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৭ শতাংশের খাদ্যের সংস্থান করতে হয় বাংলাদেশকে। এর মধ্যে ধান ও মাছসহ কৃষির নানা খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ‘জার্মান ওয়াচে’ প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক’ অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তাপমাত্রা, লবণাক্ততা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে আগামী দিনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোর একটি হচ্ছে কৃষি। ২০৫০ সালের মধ্যে শুধু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেই জিডিপির ২ শতাংশ হারাবে বাংলাদেশ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সাবেক জ্যেষ্ঠ কারিগরি কর্মকর্তা সুভাষ দাশগুপ্ত বলেন, ‘১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষির অবদান ছিল ৩৭১ মিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে ৪১ বিলিয়ন ডলারে। তবে গত দুই দশকে দেশে ধান উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার অনেক কমেছে। লাভ কম হওয়ায় ধান উৎপাদনকারী কৃষকরা বেশি দরিদ্র থাকছেন। যার বড় কারণ কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব।’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিব্যবসা ও বিপণন বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জীবন-জীবিকা চারটি খুঁটির ওপর ভর করে দাঁড়িয়ে আছে, যার অন্যতম হচ্ছে কৃষি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। কৃষকরা বাধ্য হয়ে কৃষি ছাড়ছেন। কেউ কেউ চাষাবাদের ধরন পরিবর্তন করছেন।’

একসময় ধানচাষের জন্য বরিশাল অঞ্চল বিখ্যাত হলেও এখন সেখানে চাষের সুযোগ কমে যাচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় যারা ধানচাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তাদের কেউ কেউ অন্য পেশায় যাচ্ছেন, কেউ পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন করে নতুন নতুন চাষাবাদ পদ্ধতির উদ্ভাবন করছেন। কিন্তু পেশা পরিবর্তনের হার বেশি।- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. আব্দুল মুয়িদ

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২১০০ সাল নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠ সর্বোচ্চ ১ মিটার উঁচু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশের মোট আয়তনের প্রায় ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হতে পারে। এ পূর্বাভাস সত্যি হলে তা দেশের খাদ্যনিরাপত্তাকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকিতে ফেলবে।’

‘এছাড়া উপকূলীয় অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষও রয়েছে নানা বিপদের আশঙ্কায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৬৭ সেন্টিমিটার বাড়লে পুরো সুন্দরবনই পানিতে তলিয়ে যাবে।’

জলবায়ু পরিবর্তনে কত শতাংশ কৃষক চাষাবাদ ছেড়েছেন তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান নেই। তবে চর, হাওর, পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকায় ১৭ দশমিক ১ শতাংশ কৃষকের চাষাবাদের ধরন বদলে গেছে বলে সম্প্রতি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) এক জরিপে প্রকাশ করা হয়। ওই জরিপে ১৪টি জেলার ২৮টি উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হয়। তবে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কত শতাংশ মানুষ পেশা পরিবর্তন করেছে, তা জরিপে দেখানো হয়নি।

ওয়াটার রিসোর্স প্ল্যানিং অর্গানাইজেশনের (ওয়ারপো) গবেষণার তথ্যমতে, বরেন্দ্র অঞ্চলের ৭১ শতাংশ এলাকা মাঝারি, উচ্চ ও অতিউচ্চ পর্যায়ের পানি সংকটাপন্ন। কম বৃষ্টিপাত, দীর্ঘস্থায়ী খরা ও ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর ক্রমশ নিচে নামছেই। গত গ্রীষ্মে রাজশাহীর তানোর এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমেছে ১১৩ ফুট পর্যন্ত। এর পুনর্ভরণ না হওয়ায় গড়ে এ অঞ্চলে ৪ ফুট করে নেমেছে পানির স্তর। একই সঙ্গে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে তাপমাত্রা। এতে ওই এলাকার মানুষের জীবনমানে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে।

তথ্য এ-ও বলছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নানা সময়ে আকস্মিক বন্যার শিকার হয়। জোয়ারের কারণে সৃষ্ট বন্যা উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক আকারে ক্ষতি করে। বর্তমানে প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমি বন্যাকবলিত। ২০২২ সালে হওয়া বন্যায় দেশের ৯টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনা। এ বন্যায় ৭৩ লাখ মানুষের পাশাপাশি প্রায় ১০০ কোটি ডলারের কৃষির ক্ষতি হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীভাঙন বাড়ছে। ফলে প্রচুর উৎপাদনশীল কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বাংলাদেশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরিপ অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১২শ কিলোমিটার নদীতীর ভেঙে গেছে এবং আরও ৫শ কিলোমিটার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী গবেষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অন্য দুর্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনের আরেকটি অন্যতম অন্তরায় হলো খরা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করছে। কোনো এলাকায় বৃষ্টিপাতের তুলনায় বাষ্পীকরণের মাত্রা বেশি হলে সেখানে খরা দেখা দেয়। প্রতি বছর ৩০ থেকে ৪০ লাখ হেক্টর জমি বিভিন্ন মাত্রার খরায় আক্রান্ত হয়।’

‘খরাপ্রবণ এলাকায় খরার তীব্রতা ও স্থিতিকালের ওপর ফসলের ফলন নির্ভর করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে খরার তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। দেশে বিভিন্ন মাত্রার খরায় আক্রান্ত ৮৩ লাখ হেক্টর চাষযোগ্য জমির ৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়। এছাড়া খরার প্রভাবে আউশ ও বোরো ধান, পাট, ডাল, তেল ফসল, আলু, আখ এবং শীতকালীন সবজি চাষাবাদ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তিস্তা নদীতে পানিপ্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে এর অববাহিকায় খরার তীব্রতা আগের চেয়ে বেড়েছে। এবছর চরম খরার কারণে ধানসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ড. আব্দুল মুয়িদ বলেন, ‘একসময় ধানচাষের জন্য বরিশাল অঞ্চল বিখ্যাত হলেও এখন সেখানে চাষের সুযোগ কমে যাচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় যারা ধানচাষের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন তাদের কেউ কেউ অন্য পেশায় যাচ্ছেন, কেউ পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন করে নতুন নতুন চাষাবাদ পদ্ধতির উদ্ভাবন করছেন। কিন্তু পেশা পরিবর্তনের হার বেশি।’


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top