পদ্মা সেতুর উদ্বোধন
বিশ্বকে জানান দিলো বাংলাদেশ

অবশেষে উদ্বোধন হলো প্রমত্তা পদ্মা বুকে বাংলাদেশের স্বপ্নের সেতু। পদ্মা সেতু’র উদ্বোধন যেন কোটি বাঙালির স্বপ্ন পূরণ। বহু প্রত্যাশিত-আকাংখিত পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনে খুলে গেল দেশের অপার সমৃদ্ধির দুয়ার। বছরের ২৫ জুন তারিখটি চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে বাংলাদেশের জন্য। ২০২২ সালের এ দিন দুপুর ১২টার একটু আগে ফলোক উন্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা বহুমুখী সেতু চালু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে হেলিকপ্টার যোগে মাওয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে অংশ নেন সুধী সমাবেশে। এ সময় পদ্মা সেতু নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে আমিও আজ আনন্দিত, গর্বিত ও উদ্বেলিত। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আর ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে প্রমত্ত পদ্মার বুকে আজ বহু কাঙ্ক্ষিত সেতু দাঁড়িয়ে গেছে। এ সেতু শুধু ইট-সিমেন্ট-স্টিল-লোহা বা কংক্রিটের একটি অবকাঠামো নয়, এ সেতু আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমাদের সক্ষমতা আর মর্যাদার প্রতীক। এ সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আবেগ, আমাদের সৃজনশীলতা, আমাদের সাহসিকতা, সহনশীলতা আর জেদ”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রের ফলে আমাদের সেতু নির্মাণ খানিকটা বিলম্বিত হয়, তবুও আমরা হাল ছাড়িনি। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আমরা আলোর মুখ দেখেছি। পদ্মার বুকে জ্বলে উঠেছে লাল, নীল, সবুজ, সোনালি আলোর ঝলকানি। ৪১টি স্প্যান যেন স্পর্ধিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না’, পারেনি। আমরা বিজয়ী হয়েছি। তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের ভাষায় তাই বলতে চাই, ‘সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয় : জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ আমরা মাথা নোয়াইনি।
সুধী সমাবেশে বক্তব্য শেষে, ঐতিহাসিক শুভ মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করতে স্মারক ডাক টিকেট, স্মারক পত্র ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। ব্যবহার করেন একটি বিশেষ সীল মোহর।
এরপর পদ্মা সেতু পার হওয়া প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নিজ হাতে টোল দিয়ে টাকা ও স্লিপ বুঝে নেন প্রধানমন্ত্রী। এভাবে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অতিক্রমের টোল প্রদান প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন তিনি।
পরে ফলোক উন্মোচন শেষে গাড়ী বহর নিয়ে পদ্মা সেতুতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। সেতুর মাঝে গিয়ে গাড়ী থেকে নামেন তিনি। তার সাথে ছিলেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। সে সময় বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টারগুলো বিভিন্ন কসরত ও মহড়া প্রদর্শন করে।
কিছুক্ষণ পদ্মা সেতুতে থাকার পর আবার গাড়ীতে উঠে অপর প্রান্তে শরীয়তপুরে জাজিরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। জাজিরা পৌঁছে পদ্মা সেতুর এই প্রান্তে ফলক উন্মোচন করেন তিনি।
সবশেষে মাদারীপুর শিবচরে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত কয়েক লাখ মানুষের সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
পিটিভি/জুআসা/২০২২
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবি-
https://www.facebook.com/paribeshtv/posts/pfbid0drkskgkrWn4yydhz1z746pRrHPGRPXEASKz1G1wGAYGYDi98gKHrveq2wviGRzMwl
বিষয়: পদ্মা সেতু পদ্মা সেতুর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হলো পদ্মা সেতু চালু হলো পদ্মা সেতু
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: