ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


বাংলাদেশে ২০ বছরে ৪১ বাঘের মৃত্যু


প্রকাশিত:
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:০০

আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৩৭

বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী নোনা পরিবেশের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনে পাঁচ হাজার প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৯৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১২৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৭৯ প্রজাতির পাখি, ১২৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী ও ৩০ প্রজাতির চিংড়ি মাছ নিয়ে সুন্দরবন বিশ্বের বিস্ময়।

২০০১ সাল থেকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বাংলাদেশের সুন্দরবনকে ভালোবাসার আহ্বান জানিয়ে সুন্দরবন সন্নিহিত এলাকায় এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবার আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ সুন্দরবন সন্নিহিত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

২০ বছরে ৪১ বাঘের মৃত্যু ২০০১ সালে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও পরিবেশবাদীদের উদ্যোগে খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন। সম্মেলনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সুন্দরবন দিবসে বুধবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশের খুলনা প্রেস ক্লাবে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। খুলনা প্রেস ক্লাব ও সুন্দরবন একাডেমির যৌথ উদ্যোগে এবার খুলনায় কেন্দ্রীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।

এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, প্লাস্টিক ও পলিথিনমুক্ত সুন্দরবনের জনপদ। বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, বরগুনায় এবং উপজেলা পর্যায়ে দাকোপ, আশাশুনি, শ্যামনগর, মোংলা, শরণখোলায় সুন্দরবন দিবস পালন করা হবে।

বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবন-টোয়াস আগামীকাল খুলনা মহানগরীর লায়ন্স স্কুল মিলনায়তনে সুন্দরবনবিষয়ক চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী এবং খুলনা সাইক্লিং কমিউনিটি এ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য সাইকেল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।

অন্যদিকে দিবসটি প্রাক্কালে সোমবার পরিবেশ সংগঠনের নেতারা সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীলদের বন ব্যবস্থাপনায় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

তাঁরা বলেছেন, ‘বনজীবী জনগোষ্ঠী চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের আমরা গর্বিত অভিভাবক। সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে।’

সুন্দরবনের পূর্ব ঢাংমারিতে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের যৌথ উদ্যোগে বনজীবী সমাবেশে এই দাবি জানায়। এদিকে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন আজ হুমকির মুখে।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলাধীন সুন্দরবনের কচিখালী এলাকার একটি খাল থেকে সোমবার বিকেলে একটি বাঘের মৃতদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ। মৃত্যুর কারণ জানতে গতকাল মঙ্গলবার বনের কচিখালী কার্যালয়ে বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হয়। পরে মরদেহটি কচিখালী স্টেশন এলাকার বনে মাটিচাপা দেওয়া হয়

বাগেরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ছাহেব আলী জানান, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুন্দরবনের কচিখালী স্টেশনে গিয়ে মৃত বাঘটির ময়নাতদন্ত করেছেন। বাঘের বিভিন্ন নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বাঘের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০১ সাল থেকে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৩ বছরে সুন্দরবনে নানাভাবে ৪১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২৫টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬টি বাঘের মৃত্যু হয়। কখনো চোরা শিকারির হাতে কখনোবা লোকালয়ে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়ে মারা গেছে বাঘ। আর ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে, অসুস্থ হয়ে এবং বার্ধক্যের কারণে বাঘ মারা যাচ্ছে সুন্দরবনে। এই সময়ের মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০টি বাঘের চামড়া।

২০১৮ সালের জরিপ অনুসারে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। তবে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বন বিভাগ আশা করছে। বর্তমানে বনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনার কাজ চলছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top