ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ই এপ্রিল ২০২৪, ৪ঠা বৈশাখ ১৪৩১

ব্যক্তি মালিকানায় থাকা বাগানের গাছ কাটতেও লাগবে অনুমতি


প্রকাশিত:
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:৫২

আপডেট:
১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:২৫

ব্যক্তি মালিকানায় থাকা বাগানের গাছ কাটতে অনুমতির বিধান রেখে একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইন, ২০২১’ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, যারা সাধারণ বাগান করবেন বা স্থায়ী যে গাছ লাগাবেন সেগুলোও তারা তাদের ইচ্ছামতো কাটতে পারবেন না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এরকম নিয়ম আছে। আমার বাড়িতে একটি গাছ পড়ে গেছে, এটা আমি সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাটতে পারবো না। সৌদি আরবে..., এটা ভারতেও আছে।

এটাকে ভালোভাবে প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এটার মাধ্যমে সব বনাঞ্চলকে প্রটেকশন দেওয়া হয়েছে। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে যে গাছ রয়েছে, সেগুলোও এর আওতায় আসবে। এখানে স্থায়ী গাছের কথা বলা হয়েছে।

তবে অনুমতির প্রক্রিয়া একটু সহজ করে কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দিতে বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটা অনলাইনে করা যায় কিনা, সেটা দেখতে বলা হয়েছে।

‘ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট অর্ডিনেন্স-১৯৫৯’ হালনাগাদ করে আইন হিসেবে নেওয়া হয়েছিল বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, আইনে অনেকগুলো বিষয় আছে। এর অধীনে একটা করপোরেশন হবে। করপোরেশনের একজন চেয়ারম্যান এবং পরিচালক থাকবেন। তারা এটাকে প্রশাসনিকভাবে দেখবেন। বোর্ড থাকবে, সেটা নীতিগত বিষয়গুলো তদারকি করবে। এর কাজ হবে করপোরেশনের অধীনে উৎপাদিত কাঠ বা কাঠের আসবাবপত্র আইনের অধীনে আসবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, করপোরেশনের অধীনে রাবার বাগান থেকে রাবার কীভাবে আহরণ করা যায় এবং উন্নয়ন করা যায়, তা এর মধ্যে থাকবে। বনজ সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কৃত্রিম রাবার পণ্য বন্ধে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব শিল্প সৃষ্টির বিষয়টি এখানে সন্নিবেশিত থাকবে।

সংরক্ষিত বনের পাশাপাশি অন্যান্য বনাঞ্চলকেও এই আইনে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বনজ শিল্প যেমন—আগর, সেগুলোকেও সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে যদি যান দুই পাড়ে আমরা যে বন করেছি, এটা সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে গভীর অরণ্য। এত গভীর বন সুন্দরবনেও নেই বলে আমার ধারণা। ওখানে আমরা গোখরা সাপ, অজগর সাপ, বানর, হরিণ আরও অনেক রকম পোকামাকড় ছেড়ে দিয়েছি। এটাকেও এর আওতায় আনা হয়েছে। যদিও এটা বন না কিন্তু তবুও এটাকে নিধন করা যাবে না। এগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে।

তিনি বলেন, এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ৭৫ হাজার গাছ কাটতে হয়েছে, যখন ফোর লেন রোড করা হলো। এখন কিছু করার নেই। আমি নিজে আড়াই লাখ গাছ বুনে এসেছি। যেটা কমপালসারি, সেটা তো করতে (কাটা) হবে। তবে ক্ষতিপুরণ দিতে হবে।

ব্যক্তিগত গাছ না কাটার বিষয়ে আইনের ব্যাপক প্রচারণা করতে বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কেবিনেট থেকে বলা হয়েছে পরিবেশ মন্ত্রণালয় আইন বাস্তবায়নের আগে প্রমোশন ক্যাম্পেইন করে মানুষের দৃষ্টিতে আনতে হবে।

কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বিসিএস প্রশিক্ষণ একাডেমির জায়গা বরাদ্দের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, একাডেমির জন্য যে জায়গা দেওয়া হয়েছে, সেটা আমি পুরোটা জানি না। এটা জনপ্রশাসন দেখছে। আমি যতটুকু দেখেছি, যে জায়গায় গাছ নেই সেখানে স্থাপনাগুলো হবে। গাছ কাটলে বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে কীভাবে ক্ষতিপূরন করা যায় সেটা করতে হবে। সরকারি প্রকল্পে ক্ষতিপূরনের বিধান রাখা হয়। এজন্য বাজেটও থাকে।


বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top